July 31, 2021

মীরা মুখোপাধ্যায়

 নারীতান্ত্রিক


কিশোরীটি প্রথমে অবাক ,তারপর প্রাণপণে 

আঁকড়ে ধরেছে নিজের পোষাক আর 

হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়েছে নৌকোর ভিজে খোলে।

                                                       

টোনোটিওয়াটে এসে তাকেও যে নগ্ন হতে হবে

একথা জানাই ছিলো কিন্তু এখন লজ্জা করছে,

এরিমধ‍্যে মাসি ও দিদিমা অন্তর্বাসও খুলে রেখে

নেমে গেছে অগভীর জলে

ঝিনুক হাতড়ে তুলছে। অদূরেই দুটো নৌকো

সেখানেও নগ্ন মেয়েরা আদিরসাত্মক

কৌতুকে খানখান 


নদীর হাঁসুলি ঘিরে আলো ছায়া, ক্লীবলিঙ্গ হাওয়া 

কাছে আসছে, সরে যাচ্ছে দিকচক্রবাল ছুঁয়ে তাই

মেয়েটি পোশাক খুললো....

এবারই প্রথমবার, পুরুষের সাহায্য ছাড়াই





তৈমুর খান

গুচ্ছ কবিতা

১.

যুগের প্রচ্ছদ


অস্তিত্ব খুঁজে বেড়াচ্ছি 

পিতার আকাশে অনেক নক্ষত্র ঝরে গেলে 

অন্ধকারের ছায়ায় ব্যক্তিত্ব উঁকি মারে 

কেমন করে ডাকব নিজেকে ? 


সামনাসামনি নীরব ও আমি 

চেয়ে আছি সুদূর চৈতন্য পারে 

আজ কোনো গল্প নেই 

গল্পরা চরতে গেছে মাঠের অন্ধকারে 


এক একটি বাইরের তরঙ্গ 

নোনতা ফাগুনের সংবাদে 

আমাকে ভেজাতে আসে —

দীর্ঘ ফণায় তাদের সম্মোহন কাঁপে 


দরজা খুলি । সমস্ত ক্ষয়ের চিহ্নগুলি 

যুগের প্রচ্ছদ । 

অস্তিত্ব নেই । শব্দের দেয়ালে 

সময়ের নিরর্থ নির্দেশ । 


২ 

ভোর 


মৃত্যুর কলোনিতে ভোর এল 

জেগে উঠছে মৃতেরা এবার 


রোদ্দুরেরা শাড়ি মেলছে 

কাকলিরা বসাচ্ছে বাজার 


নাচের স্কুল খুলে দিয়েছে হাওয়া 

পাতাদের কানাকানি 

                        ভ্রমরদের শুরু আসা-যাওয়া 


যার জন্য 


কার কণ্ঠস্বর ? 

ভ্রমের তুলনা ভেঙে ভেঙে 

সত্যেরও অপলাপ হয় 

দীর্ঘ ছায়ার গাছে 

যদিও অনবদ্য কুসুম ফোটে 

কুসুম কি জানে সুখ ? 

যার জন্য সমস্ত বিকেল গেল 

যার জন্য স্বপ্নেরা শুকনো কিংশুক 


শ্রীনিরপেক্ষ 


চারিপাশে নীল মাছ 

বুড়বুড়ি তুলছে 

আমি কেন তাদের মতো হব ? 


চারিপাশে মাছধরা লোক 

টোপ ফেলে বসে আছে 


আমি কেন সবার মতন টোপ খাব? 


জলে অন্তর্বাহী স্রোত 

বিষণ্ণ শ্যাওলার কাছে 

আমি নিরপেক্ষ হতে চাই 


যদিও এখানে বেশিক্ষণ স্থায়ী হওয়া যাবে না কখনও 


বাসা বদল


বাসা বদল করার কথা হচ্ছে ঘন ঘন 

এবার কোন্ বনে যেতে হবে… 


সবকিছু বুঝে তারপর 


জীবনের ইতিবৃত্ত অলিখিত রেখে 

একটা শ্লেট শুধু 

সাদা পেন্সিলে ভর্তি করতে চাই 


বাসা বদল হলেও হৃদয় বদল হবে নাকো 

  ৬

অনুভূতি 


তোমার হাতের ছোঁয়াটুকু 

লেগে আছে শরীরে আমার 

আমি তাকে অনুভূতির অ্যালবামে রাখি 


প্রতিটি বসন্তে পাতা ঝরে গেলে 

তাতেই ফোটাতে চাই নতুন মঞ্জরী 


অনুভূতির মৃত্যু নেই 


প্রাচীনত্ব নেই 


অনুভূতি রোজই এসে দরজায় দাঁড়ায় 

                                        নতুন কিশোরী 



        ৭

আমাকে বৃষ্টির ভেতর রাখো 



আমাকে বৃষ্টির ভেতর রাখো 

সময়ের কোলাহলে হুলস্থুল পাড়া 


আগুন জ্বালায় কারা ? 


তির-ধনুক ছুটে আসে 

মঞ্চে মঞ্চে যুদ্ধের মহড়া 


দিন যায় । মাইকে ঘোষণা হয় 


নাম পরিচয় 

সামনে আলোর বৃক্ষ 

মনীষীদের নাম লেখা পাতায় পাতায় 


এক একটি নামের কাছে এসে 

খুঁজতে থাকি কোথায় করুণা 

হৃদয় কোথায় থাকে 


হাত বাড়ালেই হাত কাছে আসে কিনা 


আমাকে বৃষ্টির ভেতর রাখো 

বিশ্বাসও অসহ্য এখন 

মরে গেছে সব সান্ত্বনা ! 


 

ধ্বংস বেশ বাজনা বাজাচ্ছে


মৃত মানুষের ভিড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে 

সদ্য রক্তপাত আর যন্ত্রণার চিৎকার 


কোন্ দিকে যাব ? 


ধ্বংস বেশ বাজনা বাজাচ্ছে 

সাম্রাজ্যের ইতিহাসে অন্ধকার 


কোথাও যাওয়ার নেই 


চকচকে কাদের উলুধ্বনি ? 

অস্ত্রের বিবাহ অস্ত্রের সাথে 


ধর্ষক দাঁড়িয়ে আছে ঈশ্বরের মতো 

ধর্ষকের পায়ে কারা ফুল রাখে ? 


কোথাও রাস্তা নেই 


সভ্যতা কাঁপে এক বিস্ময়ের জ্বরে.... 


       ৯

বিষাদের দেশে


বিষাদের দেশে সন্ধ্যা এল 

ভাঙা তোরঙ্গগুলি থেকে 

আমাদের নিঃশেষ মূলধন

অবলুপ্ত হবে। 


সাংসারিক ক্রিয়ার আলো 

গৃহে গৃহে জ্বলে 


গৃহিণীরা হৃদয় আগলে রাখে । 


বস্তু পৃথিবীর চাঁদ উদিত হলে 

কী নামে তাকে ডাকা হবে ? 

ভাঙা তোরঙ্গগুলি নিঃস্ব ইতিহাস... 


       ১০

        কলসি


পর্দা সরিয়ে নিলেই দেখি ছায়ার বাঁশি বাজে 

দু একটা জোনাক ওড়ে, আগুনের দানা দানা 

রূপকথাগুলি ওড়ে 

সহিষ্ণু পাথর হয়ে বসে থাকে কাঙাল স্বপ্নেরা 


তবু রথ চলে, ৠতুমতী নারীর কঙ্কণ বেজে ওঠে 


ফিরে দেখি একাকী দাঁড়িয়ে আছি ঘাটে 

কলসি একা ভেসে গেছে দূর 

ও পাড়ার নতুন তরঙ্গের কাছে 


    ১১

মরীচিকা 


মরুর পাহাড়ে প্রথম সঙ্গমদৃশ্য লেখা হলো 

অভাবী ঘরের চাঁদ নরম স্তনের মতো 

দূর থেকে ছুঁয়ে দেখা 


দু একটা হরিণ শুধু ছুটে যায় 

বাঁকা ও কাতর শিঙ্ তুলে 

ব্যথাতুর ঝরনার খোঁজে…. 


নিজেকে সামলে নিই 

এইসব দৃশ্য বড় আবেগ মেশানো 


রোদের ভাষায় লেখা অলীক নাটক 

যদিও বাস্তব কিছু দৌড় সারাদিন 

শোনায় পদধ্বনি… 


    ১২

শিকারি


শাদা বক হয়ে দিন বসে থাকে জলে 

জলের ভেতরে জটিল মাছের গান শোনে 

দু একটা স্বরলিপি তুলে নেয় ঠোঁটে 


কেননা, তারও জীবিকা আছে সময়ের স্রোতে 

রক্তমাখা উল্লাস আর জৈব তাড়না 

মাঝে মাঝে উন্মনা করে দ্যায় তাকে 

জল তবু দেহ ঢেকে চলে যায় জলে 


শিকারির ধ্যান বাড়ে সকালের প্রত্যাশায় 



কবি পরিচিতি : জন্ম ২৮ জানুয়ারি ১৯৬৭, বীরভূম জেলার রামপুরহাট ব্লকের পানিসাইল গ্রামে। 

পিতা ও মাতা :জিকির খান ও নাওরাতুন। 

পড়াশোনা :বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে মাস্টার ডিগ্রি এবং প্রেমেন্দ্র মিত্রের কবিতা নিয়ে পি এইচ ডি প্রাপ্তি। 

পেশা : উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহ শিক্ষক । 


প্রকাশিত কাব্য : কোথায় পা রাখি (১৯৯৪), বৃষ্টিতরু (১৯৯৯), খা শূন্য আমাকে খা (২০০৩), আয়নার ভেতর তু যন্ত্রণা (২০০৪), বিষাদের লেখা কবিতা (২০০৪), একটা সাপ আর কুয়াশার সংলাপ (২০০৭), জ্বরের তাঁবুর নীচে বসন্তের ডাকঘর (২০০৮), প্রত্নচরিত (২০১১), নির্বাচিত কবিতা (২০১৬), জ্যোৎস্নায় সারারাত খেলে হিরণ্য মাছেরা (২০১৭) ইত্যাদি। 

পুরস্কার : কবিরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার ও দৌড় সাহিত্য সম্মান, নতুন গতি সাহিত্য পুরস্কার, কবি আলোক সরকার স্মারক পুরস্কার ইত্যাদি ।

ঠিকানা : রামরামপুর (শান্তিপাড়া), রামপুরহাট, বীরভূম, পিন ৭৩১২২৪, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।





সব্যসাচী পণ্ডা

 


বেনিয়া

 ভয়সমগ্র - ৫০ 


Heliopolis - Fear of the sun

আপাতত ব্রহ্মাণ্ড বলতে পৃথিবী সূর্যের শক্তিতে সচল
সে আলো পেতে অন্ধের প্রার্থনা আয়ু কেড়ে নেয় ...
তাকে ভয়, হিসেব মেলে না, কোন সে জটিল তত্ত্ব
দেহের প্রতিটি উপাদানের গোড়ায় বসে আছে আস্ত সূর্য
কত বিরোধীপক্ষের সংহারক ফোটন কণা, ভাবছো ট‍্যান
এই ছেলেমানুষি ইতিকথায় কেন্দ্রকে উপেক্ষা করা যায়
নিজের নাভিমূল ভুলে জন্মছকের কোন গ্রহে রাখবো পা
না থাকলে বুঝবে, না থাকার চিন্তা শিকড়ে ঘুণ ...
কত আলোকবর্ষ দূরে, অথচ নির্মল রোদের গান সুন্দর
অস্তরাগের আভায় প্রেম কি আবেগে ভাসে না
মেরুদণ্ড জড়িয়ে ফারেনহাইটের চলমান পারদে থাকো ...


অমিত চক্রবর্তী

মিথষ্ক্রিয়া



‘আমি ডুবতে রাজি আছি’।

জানো ডুবতে? জানা যায়? সঞ্চারী মানুষীর বক্ষে

দু’বেলা যে একতারা বেজে যায়, তুমি শুনেছ তার বোল?

নিয়েছ কি মাটির ঘ্রাণ? না কি তুমি শুধু দুন্দুভির খোঁজে –

ডুবতে গেলে হাঁটু কেঁপে যায় কিন্তু, ‘আমি তরল হয়ে যাচ্ছি

বহমান, আবহমান

আমার চোখে তুমি ঘোর দেবে না, দেবে না বলছি’

বলতে হয়, খুব অস্পষ্টে কানে কানে।



এ শতাব্দীর সেরা চুমুটা আমি দিয়ে ফেলেছি সোনালিয়াকে।

তাই হৃদয় এখন ঘোলাটে,

হৃদপিন্ড পুরোনো পেশী

যা চাই তাই পেতে পারতাম,

তবু পুনর্জন্ম চেয়েছি এখন –

তার সব ব্যথা, দুর্বিপাক নিয়ে

আজ আমার পুনর্জন্মের প্রথম দিন।



আজ তুমি শ্রান্ত। আজ তুমি চুপ থাকতে চাও, অথচ

কেউ একটা পায়ে পায়ে ঘুরুক

নিয়ে আসুক এক ভাঁড় লপচু চা –

অথচ নাম ধরে কেউ ডাকবে না

অথচ জানাবে না চা এসেছে বেডরুমে

শুধু নামিয়ে দিয়ে সাইড টেবিলে, একবার আড়চোখে

চেয়ে

ছড়িয়ে দেবে তার ধমনীস্পন্দের নির্বাক সম্ভার।



অনঞ্জন

 বেদনার বিদায়


তোমার সব কবিতা ফেরত নাও,

আর আমায় একটু আগুণ দাও-

বিষ মেশানো আগুণ,

যাতে আর আশা না থাকে,

নইলে যে ঠোঁট কাঁপে

কাঁপতেই থাকে;

এইযে জেগে থাকা, এইযে বেঁচে থাকা-

মাথা-বুক-পা-হাত

শ্রাবণের এই নিঃস্ব অঘোর!


আমার একলা ঘরের দাবী,

আমার মরতে না পারা ক্ষত,

আষ্টেপৃষ্ঠে,

এখানে পাতালপোড়া রঙ

ফুটে ওঠে কাঁকরে ও চোখে- চোখের কাঁকরে,

এখানে বেদনার বিদায়ে-

থাকে রিক্ত।   


             

স্নেহাশিস মুখোপাধ‍্যায়

 গুচ্ছ কবিতা


(১) 

হিঙ্কার 


জলাভূমির পাশে দাঁড়িয়ে ঘ্রাণ নাও!

সেই-ই আদিগন্ত তাড়নার জল।

হাঁদা-গঙ্গারাম হয়ে হাঁটু মুড়ে ছুঁয়েছো অজগর!

প্লাবন ছাড়া কাগজের পাতায় কোনো নদীর নাম নেই।


হাতে ও কিসের দাগ - সাদা, সাদা - জানো?

ও হাতে রক্তের স্রোত কোথায় যেন থেমে আছে! 

কনুইয়ের ছিলা টান করো!

তীর সঞ্চয় করো। 

ছুঁড়ো না কখনো - যোজনে যোজনে। 


(২) 

দহন 


শব তুলেছি কাঁধে।

কুচো কুচো কাগজ করে পুড়িয়েছি সব!

মুঠো মুঠো ছাই ঢেলেছি 

শীতল শীতল ঘাটে।

কতো রক্ত মিশিয়েছি রক্তহীন এই হাতে।

আমার শরীরখানা জলে ছুঁইয়ে দে না! 

দেখি, কেমন গঙ্গা বইছে এখন?

জল, নাকি স্ফুলিঙ্গ - সব সন্দেহের কণা! 

ছোঁবো না, ছোঁবো না জল,

ছোঁবো না মা বিশুদ্ধ হাওয়া! 

পড়ে থাকতে দে মা,

ধানের ক্ষেতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দে!

তোর শরীরে সূর্য ডোবার আলো।

জ্বালবো, এবার জতুগৃহের যতো দহন, 


সব জ্বেলে দেবো... 


(৩) 

ভালোবাসা শুধু


আমি ভালোবাসা, শুধু, বলি!

আমি তোমার হয়েই চলি!

তুমি হাসিভরা মুখে ভরিয়ে দিয়েছো

অফিসের ঘরগুলি!


তুমি উত্তর থেকে হাওয়া ডেকে নিয়ে

বৃষ্টি এনেছো শহরে।

তাই জল ভরে আসে চোখের পাতায়

বিকেলে কিম্বা দুপুরে।


দীপ নিভে গেলে আকাশ-সিন্ধু

ওপারে বাজালো বাঁশি।

আমি একবার বলি, সববার বলি,

তোমাকেই ভালোবাসি। 


আমি ভালোবাসা, শুধু শুধু বলি!

আমি তোমার হয়েই চলি! 

তুমি হাসিভরা মুখে ভরিয়ে দিয়েছো

অফিসের ঘরগুলি!


(৪) 

লিভারের অসুখ 


কোথায় রাখবো তোকে?

দানে, ধ্যানে, অন্নে না চালে?

কোথায় রাখবো তোর পেটফোলা

আদমসুমারি! 

কোথায় আড়াল করবো আমাদের মমি-দেহগুলো? 

এখানে থাকিস না দিদি,

চিনে নে অন্য কোনো তীর! 


হা, সুর, বাজো না,

হে তাল, দ্রিমি দ্রিমি বাজো।

ওর শরীরে দশার্ণব ঢেউ - 

জল, শুধু জল তুমি - আজও!


দ্রিমি দ্রিমি বাজো তাল,

মহামারি ছড়াও গো সুর! 

এখানে থাকিস না দিদি,


যা চলে যা, ছাইভস্মপুর!


(৫) 

অবতার 


অগ্নি, আলো দাও কাকের সমাজে।

 বিষ্ঠা ছাড়ো কাক! 

পনেরো দিন, একমাস, পঁয়ত্রিশ বছরের বিষ্ঠা ছেড়ে,

দুর্মুখ - উড়ে যাও পুশিল-মেধার তীরে তীরে!  

অগ্নি, আলো ঢালো!

পালকে যারা মরে গেলো - 

পালকের ছদ্মবেশে -

কাক থেকে কাকতাড়ুয়া -

তাদের কঙ্কালপীঠ

দেওয়ালে ঘুঁটের মতো পাঁচ আঙুলে বসিয়ে দিয়েছে।

দেওয়ালে রঙ ছিলো - রঙ ছিলো দেওয়ালে।

কারচুপি হয়ে গেছে রঙ - চুপ, চুপ,

শুনতে পেয়ো না কেউ, পোশাক খুলছি, চুপ!

দেখতে যেয়ো না কেউ, ৯-কার তুলছি। 

শিরাতে উদ্ভট গন্ধ, ৯-কার ফুলছে।

অগ্নি আলো ঢালো, ৯-কার পোড়াও!

৯-কার পুড়ছে, বিন্দু, গোত্র, বিন্দু...

সিন্ধুর কাম, কামের গোত্র...

ঈর্ষায় মরে গেছি 


রাম!  


(৬) 

ডুব 


ডানা মেলার আগে

কার্জন পার্কের গায়ে শ্যেনপাখির দল

হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েছিলো।

দুপুরে গণেশ এ্যভিনিউয়ের মাথায় উড়ে এলো।

ডানায় বঙ্গোপসাগর। হৃদয়টা ততোখানি সাগর ছিলো না।

ডানা ঝেড়ে উড়ে চলে গেলো দূরে।

ম্যানহোল খুলে দিলো কর্পোরেশন।

ম্যানহোল ইঙ্গিত করে চলে গেলো 


অতল গহ্বরে!






পলাশ দাস

 নদী


জনান্তিকে মিশে থাকা কয়েকটা নাম আমার বন্ধু 

যারা জল ঠেলে পায়ে হেঁটে পার হয় নদী পথ 

পিঠে ব্যাগ মাথায় রোদ 


ছাতার কালো পিঠে অসংখ্য ছিদ্র 

কলকব্জা আর সিক বেরিয়ে আছে 

উন্মুক্ত আকাশের নিচে  


                                                     



পিঙ্কু ত্রিপাঠী

 জীবনান্তে 


হিজলের বনে রক্তাক্ত তিতির 
মরণ যন্ত্রনায় কাতর 
বারবার ফিনিক্স হতে চেয়েও ফিরতে হয় তাকে 
পিছুটান বলে যা ছিল 
চাপা পড়ে যায় আত্মহুতির অমোঘ পাপে.. 
এ তো জীবনান্ত 
হিসেব বলে কিছুই নেই এখানে 
এক আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে এগিয়ে চলা 
অনন্তের দিকে.... 



 মায়ের অ-সুখ 


মায়ের অ-সুখ, 
মনের অ-সুখ, 
রাত জেগে চিরকাল ভাবে 
কতদূর অবিভক্ত বাংলা সাহিত্যের সীমানা... 
মা কি আজো স্বপ্ন দেখে? 
মায়ের স্বপ্নের কি ভীষণ মায়া 
লুকিয়ে লুকিয়ে গল্প লেখে 
নিজেই পড়ে,  নিজেই শোনে 
 নিজেই গড়ে তোলে
 এক অপ্রকাশিত সাহিত্যের ইতিহাস |
মায়েদের স্বপ্নের কি ভীষণ মায়া.... 






শান্তনু দাশ

দায়ক

 

ধর্মাধিকরণ প্রাঙ্গণের কৃষ্ণসিংহাসনে আসীন দণ্ডদায়ক মহিষধ্বজ ধর্মরাজ,

দক্ষিণ হতে ভেসে আসছে নরপিশাচবর্গের বিনীত আর্তনাদ, উত্তর হয়ে সুমধুর রুদ্রবীণার তান। এই স্বর্গ নরকের মধ্যবর্তীতে দণ্ডায়মান, আমি, একাকী সঙ্গী সাথীহীন

“ তুমি দুরাচারী, কপটী, কী লাভ অর্জিত করলে এই অধর্মসম্পাদনে ? ” ধর্মশমন প্রাঙ্গণের সর্বসম্মুখে জিজ্ঞাসা করলেন আমারে ।

সম্পূর্ণরূপে ক্ষান্ত তখনও হননি তিনি । ক্রোধান্বিতরূপে পুনরায় সূর্যপুত্র বলে ওঠে, “ ধিক , ধিক জানাই তোমার মতিকে, কেন হলে না ধর্মের শরণাগত ? ”

                    

   এইকথা শুনে সহাস্যে প্রতিবচন করি, “ আমি ? সবাই যদি হয়ধর্মের বশীভূত , ধর্ম আবির্ভূত হবে কী করে ?

ধর্মের জয় যদি হয়ে থাকে পূর্বলিখিত, 

তবে অধর্মকে আলিঙ্গন করতেই হবে ধর্মকে

ধর্মকে বাঁচতে, ধর্মকে চলতে প্রতিপদে 

সাহায্য করবে অধর্মই , অন্যথা নয় কিছুই; আমি এই করেছি মাত্র, ধর্মরাজ, আমি এই কার্যের কেবলই নিমিত্ত ।

কেবল নহে ভীষ্ম, আমারও ছিল ভীষণ প্রতিজ্ঞা ,

যখন আমার পরিবার ওই ভীষ্মের আদেশক্রমে ছিল কারাগারে বন্দি, অসহায়, অভুক্ত ; 

তখন কোথায় ছিল এই ধর্ম ? এই সদাচার ?

 তারা তৈরী করেছিল আমায় নিজস্ব মৃত্যুর পথ অঙ্কিত করে, 

চুতুরঙ্গের ঘোটক

সেই শতজনের আশীর্বাদ আমার মস্তকপরে, 

হে যম পাপ আমার পুন্য সমতুল্য

ছিল একটিমাত্র অভিলাষ ,

 ভীষ্মের বংশ বিন্যাস ও বিনাশ ।

কে করেনি পাপ , কে করে না অধর্ম এই পটভূমে ?

 কালদেব, ধর্ম তখনই করে জয় যখন তার বর্ম অধর্ম হয়

ধম জয়ী হয়ে কী সে পেল ?

 যোগ্যপ্রাপ্যনিধি তো অধর্মের রয়ে গেল

আমার নামার্থ শুভ, নই শোক-অনুতাপে

শকুনি আমি , 

খলনায়কের বেশে আমিই নায়ক ও ধর্মদায়ক এই একছত্রভারতে। ”





নির্মাল্য মণ্ডল

 ১. মাঝদরিয়া  


রাত্রির বুক চিরে নেমে আসে মেঘ

তোমার ভালোবাসা মাখা হাতের স্পর্শে

একদিন ভেঙেছিল ঘুম।

ঘুম ঘুম চোখে দেখেছিলাম 

তারাদের আনাগোনা,

তুমি তো ছিলে আমারই পাশে

হাতে হাত রেখে... 

দমকা হাওয়ায় নিভে গেল সব

অন্ধকারে তোমার হাত হাতড়াতে হাতড়াতে 

মাঝদরিয়ায় ভেসে চলি

কিনারার খোঁজে।


২. দিন অন্ধকারে 


এখন আর কবিতা আসে না আমার 

অতর্কিতে দু-একটি লাইন দাগ দিয়ে যায় মনে 

কখনও লিখি

কখনও না লিখে হেলায় হারিয়ে ফেলি শব্দ 

সময় যে সাথ দেয় না

দৈনন্দিন টানাপোড়েনে পুড়ে মরি... 

সুজন সুধায় না কুশল

পাশাপাশি প্রতিবেশী প্রেম ভাগ করি

সুখের ঠিকানা খুঁজি

জীবনজোনাকি জ্বলে অন্ধকার কারাগারে 

এখন আর কবিতা আসে না আমার। 



দীপঙ্কর সরকার

 ভাষা 


কী ছিল ও-দুটি চোখে বুঝিনি তো

সহসা চোখ রেখেছিলে চোখে সে কি

কেবলই কৌতূহলে , আর কিছু নয় 

বুঝিনি তা আজও , ভেবে ভেবে ব্যাকুল 

হয়েছি রাতভর । নিজের ভেতর নিজেকে

কেমন গুটিয়ে রাখো কপট ছলনা ময়--

সাধ্য কী বুঝবে গোবেচারা অনুভব কতটা

শব্দময় ! অনুরাগে সিক্ত যখন চোখের

দুটি পাতা সে কি নিছকই বেদনাময় !


স্বপ্ন 


ঘুমের ভেতর স্বপ্ন আসে স্বপ্ন হারায়

ধরতে গেলে ধরা যায় না কেমন অশরীরী !

ঘুমের ভেতর স্বপ্ন কেবল করে ঘোরাঘুরি

ছুঁতে গেলে ছোঁয়া যায় না অদৃশ্য হয় সে তখনই ।


অপেক্ষা 


কেউ না কেউ কোথাও না কোথাও তোমার অপেক্ষায়

                                                                       আছে

তুমি জানো না নিশ্চিত । কেউ না কেউ কোথাও না

                                                                  কোথাও

তোমারই অপেক্ষায় থাকে , তুমি যাকে উপেক্ষা করো

                                                                     হয়তো

সেও তোমারই অপেক্ষায় রত বছর ভর কেবলই 

                                                                      গুনছে

প্রহর । তোমাকে নিছক দেখবে এক ঝলক কিম্বা

                                                                     শুনবে

তোমার বাণী , তাই বিছিয়ে রেখেছে স্বপ্নের মায়াজাল

                                                                         কবে

সেই জালে ধরা দেবে তুমি সেই অপেক্ষায় হয়তো সে

                                                                    ঝরঝরে

করেছে তার ইহকাল পরকাল ।



সুদীপ ঘোষাল

 পঞ্চপ্রদীপের আলো


ফাগুনের পাগল হাওয়ার মত কিশোরী মন

সীমাকে প্রেমের প্রথম' সা' শিখিয়েছিল

চলকে উঠেছিল সফেন সমুদ্রের মত কোমল ত্রিকোণ

জঙ্গলের পাশবালিশে গভীর দূরত্বে উষ্ণতার অনুভবে

চঞ্চল বেসামাল নাবিক দিশেহারা আজও

সে কি জানে পথশেষের গান



আজও ছিঁড়ে যায় পল

চেতনার চঞ্চল আঘাতে

বোস বাড়ির বিধবা বৌটা পুকুরে

সাদা শাড়ির আড়ালে লুকিয়ে রাখে 

বেসামাল স্বপ্নের অরগ্যাজম

এদিকে বিপিনবিহারী বাঁশি বাজায় পুকুড়পাড়ে

ছিপ ফেলে

বিষন্ন দুপুর লাল রঙে রাঙিয়ে দেয় উপোষী সিঁথি



সুপুরির মত কলম আকৃতির সুখ

ফাউন্টেনপেনের কালি ঢালে সফেদ পাতায়

এলোমেলো জঙ্গুলে নদীর ছটফটানি

তরণি তরতরিয়ে বিলিয়ে দেয় গোপন স্বত্ব



হে বিধবা শাড়ির বিরহ

নেমে এস বাস্তবের বিলাসে

সাদা রঙের জয় হলে

পুরুষত্ব হারিয়ে ফ্যালে সেলফি




আজানুলম্বিত হস্তের মত 

কল্পনার কাঠি

জাগিয়ে তোলে ঢেউ

আরামে জল দুলতে দুলতে

ভরে যায় সৈকতে বালি




ইন্দ্রাণী পাল

 মনখারাপের দিনরাত্রি

(এক)

শেষতক কতকগুলো ইচ্ছা উধাও হয়ে যায় আর আমি
চিঠিপত্রহীন ডাকবাক্সের পাশে একজন্ম শুয়ে আছি।
একটা বাস হুড়মুড় করে গুমটি থেকে বেরিয়ে আসে
অর্ধনগ্ন দিনগুলো বিদায় নিচ্ছে। তোমরা সবাই
যে-যার মতো হাতমুখ ধুয়ে উঠে আসছো। মিলনী রেস্তোরাঁয়
ম্যাটিনি শো হাতে হাতে উঠে আসছে জ্বলন্ত স্মৃতির অঙ্গার
আর আমাদের অনুভূতিগুলো হামাগুড়ি দিতে দিতে পাশ ফেরে।
একটি হৃদয়হীন রাত ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায় গঙ্গার দিকে।

(দুই)

ঘুমের মধ্যে একটা বেড়াল লাফ দিয়ে ওঠে
আর তার রোঁয়াগুলো উঁচু হয়ে থাকে।
এক একটা দিন কিছুই না; শুধু বাঁশঝাড়ে ঘুঘু ডাকা স্মৃতি
জানলার পাশ দিয়ে একটা ফাইটার প্লেন উড়ে যায়
ইস্তিরি না-করা জামাকাপড়গুলো বারান্দায় ঝোলে
আমি অনেকদিন হলো আইসক্রিম খাই না
ছাদে উঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাই না
                                 তুমি এলে বীরেন ভদ্র শোনাব বলে।

(তিন)

একটা হাতলবিহীন চেয়ারে বসে আছি
আর দূরে নক্ষত্র দেখছি। মনে হচ্ছে খই
আর খুচরো পয়সার ভিড়ে আমি অযথাই হারিয়ে যাচ্ছি।
মাঠের দিক থেকে মেয়েরা উঠে আসছে
মনে হয় আজ কোনো উৎসব আছে
টিভিতে কে একটা ভজন গাইছে
টেবিলে খুলে রাখা বই হাওয়ায় ফরফর করে উড়ছে
আমি বুকপকেট হাতড়ে তুলে আনছি একটা
                                              জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি।

(চার)

এক একটা সুখের দিন খচখচ করে
আমি একটা পোড়োবাড়ির সামনে বসে থাকি
মুড়ি আর মিছরি নিয়ে মানুষেরা খুব তাড়াতাড়ি হাঁটে
ছায়ার ভিতর ছায়া দীর্ঘতর হয়
বিদেশী মেয়েরা কুকুর নিয়ে ঘুরতে বেরোয়।আমিও হাঁটতে থাকি
পিছোতে পিছোতে একটা খাদের ধারে এসে দাঁড়াই
একটা চোখ নেমেই যায় অন্ধকারের ভিতর।



মুহাম্মদ আকমাল হোসেন

 উৎবেগ


 পালাতে পালাতে ঘরের ভিতরে এসেছি

 এখন ঘাতকের মতো আমার দিকে তাকায় -

 দরজার হাতল, ঘরের ছিটকিনি, সিঁড়ির রেলিং।

 ঘর আর ঘুম রাখার জায়গা নেই।


 আমিও আমার জন্য নিরাপদ নয়।

 আমার হাত আঙুলকে আর বিশ্বাস করছি না।

 আমার শ্বাসকে আর অবাধে প্রকাশ হতে দিচ্ছে না। 


নিজেকেই জানছি ঠিক আছে? গলা, ফুসফুস, সুগার লেবেল।


 বিশ্বাস করতে পারছিনা।

 আগামীকাল আমার জন্য কি না!




সুমন সাহা

আহ্লাদের বন


দেয়ালে টানানো আহ্লাদী ছবি পড়ে যাবার পর, পরকীয়া হাসলো।

সাথে সাথেই তেঁতুলের বনে আগুন!

তেঁতুলের কাঠই জানে কাঁচা অবস্থাতেই কেমন জ্বলে।

শালিখ আর ঘুঘু খেলছে

হাততালি দিয়ে যাচ্ছে,

প্রকাশ্যে গোপনে আতাফলের ব্যবসায়ী!


শুভাকাঙ্ক্ষী মাসি শোভা


চোখ গর্তে।

অপচয়ের পরীক্ষা দিচ্ছে।

নিজের ঘরের খোঁজ আড়ালে রেখে

অন্যের ছিদ্র অন্বেষণ,

যুক্তি, পরামর্শ-মরামর্শ দিক বিদিক কাইত---

মাসি,

'আপন ঘরের খবর লে-না...'

ঢেঁড়স ভাজি পুড়ে যাচ্ছে-তো!


মন চাইলে মন খুলে হাসো


অনেক কোকিলের খবর রাখা হয় না।

রাখি না।

প্রতিবেশি ভুলে যাচ্ছে,

কোকিল আপন হচ্ছে।

নিজের ঘরের খবর

জানার ইচ্ছে হচ্ছে না।

অন্যের ঘরের খবর নেয়াটা

ভীষণ জরুরি খবর।


হাস্যকর গল্প পড়েও

হাসিটা আর আসছে না।

এই গল্প শহর ছেড়ে

গ্রামেও চলে যাচ্ছে!


যোগাযোগের একতরফা ব্যাপার---স্বস্তিহীনতায়


বিয়ের নিমন্ত্রণপত্রের মেয়েটিকে

চাঁদের সাথেই তুলনা করতে-করতে বালক---হারাচ্ছে...


'তাই! আচ্ছা! বেশ মজার-তো'---বলেই উধাও বালিকা---

       রেশ কাটে

                  সুঁতো!

ঘুড়ি আর বালকের আকাশে

                                  ওড়লো না---


প্রেমের ঘ্রাণ অন্য আকাশে ওড়ার আগেও,

পুনরায় বালিকার কথাই ভাবলো!


বিরক্তির বিরক্তি অন্যদিকে


বিরক্তি বেড়াতে আসেনি---

বাড়াবাড়ি-রকম ভাবনায় আছি

                          

কাউকেই বলার ইচ্ছে জাগেনি

                         তোমারে নিয়ে;


চোখে-চোখ রাখার মতো

ঘটনাই---অঘটন ঘটিয়ে

                   সরে গ্যালো...


মুগ্ধতা এখনো প্রস্তুতি সম্পন্ন করে,

                                করে যায়!




সমাজ বসু

 গাইড


মানুষ এখন মানুষের হাত ছেড়ে অসময়ের আঙুল ধরে হাঁটছে,

জেব্রাক্রসিং চৌরাস্তার মোড় ছাড়িয়ে কোথায়---

কোন নিস্তব্ধ সুড়ঙ্গে?

সব জারিজুরি শেষ---

জামার কলার,তর্জনী নামিয়ে একমনে শুনছে

অসময়ের ধারাবিবরণী। 

আর চোখের সামনে---

সেই কবেকার ক্যানভাস-

ছবি ঘুঘনির এঁটো শালপাতার মত

উড়ে যাচ্ছে ম্যানহোলের দিকে।







অরুণ সিংহ মহাপাত্র

 ভালো থেকো 


ভালো থেকো শাপলা শালুক মাঝে-

সময়ের পরিযায়ী পাখি, 

গহিন বনানী মাঝে ভ্রমরীর ইতিবৃত্ত_

কিম্বা যেখানে স্বর্ণলতায় কলা বৌ সেজে,

যে গুল্মটি মিটি মিটি চেয়ে থাকে-

আকাশের দিকে-

শহরের রাজপথে কোলাহলে মিশে গেছে

যে আদিম মানুষের পরবর্তী দল;

ঊষর বালুকা পথে যে বেদুইন গান গায়-

মরু জাহাজের।

মক্কা মদিনা প্যালেস্টাইন কিম্বা

কানাডার পথে ঘাটে যে মেয়েরা, 

স্বপ্ন দেখে হলুদ জীবন কিম্বা

ভালো থেকো তুমিও...






গুচ্ছ কবিতা।।তৈমুর খান ।।

সমস্ত যুদ্ধের পর   অনেক মৃত্যুর পর এই বেঁচে থাকা  হেসে ওঠে মাঝরাতে  কোনও পিয়ানোর সুরে  খোলাচুল উড়ে আসে তার  বুকের ভেতর থেকে জ্যোৎস্নার ফণা ...