July 31, 2021

ইন্দ্রাণী পাল

 মনখারাপের দিনরাত্রি

(এক)

শেষতক কতকগুলো ইচ্ছা উধাও হয়ে যায় আর আমি
চিঠিপত্রহীন ডাকবাক্সের পাশে একজন্ম শুয়ে আছি।
একটা বাস হুড়মুড় করে গুমটি থেকে বেরিয়ে আসে
অর্ধনগ্ন দিনগুলো বিদায় নিচ্ছে। তোমরা সবাই
যে-যার মতো হাতমুখ ধুয়ে উঠে আসছো। মিলনী রেস্তোরাঁয়
ম্যাটিনি শো হাতে হাতে উঠে আসছে জ্বলন্ত স্মৃতির অঙ্গার
আর আমাদের অনুভূতিগুলো হামাগুড়ি দিতে দিতে পাশ ফেরে।
একটি হৃদয়হীন রাত ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায় গঙ্গার দিকে।

(দুই)

ঘুমের মধ্যে একটা বেড়াল লাফ দিয়ে ওঠে
আর তার রোঁয়াগুলো উঁচু হয়ে থাকে।
এক একটা দিন কিছুই না; শুধু বাঁশঝাড়ে ঘুঘু ডাকা স্মৃতি
জানলার পাশ দিয়ে একটা ফাইটার প্লেন উড়ে যায়
ইস্তিরি না-করা জামাকাপড়গুলো বারান্দায় ঝোলে
আমি অনেকদিন হলো আইসক্রিম খাই না
ছাদে উঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাই না
                                 তুমি এলে বীরেন ভদ্র শোনাব বলে।

(তিন)

একটা হাতলবিহীন চেয়ারে বসে আছি
আর দূরে নক্ষত্র দেখছি। মনে হচ্ছে খই
আর খুচরো পয়সার ভিড়ে আমি অযথাই হারিয়ে যাচ্ছি।
মাঠের দিক থেকে মেয়েরা উঠে আসছে
মনে হয় আজ কোনো উৎসব আছে
টিভিতে কে একটা ভজন গাইছে
টেবিলে খুলে রাখা বই হাওয়ায় ফরফর করে উড়ছে
আমি বুকপকেট হাতড়ে তুলে আনছি একটা
                                              জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি।

(চার)

এক একটা সুখের দিন খচখচ করে
আমি একটা পোড়োবাড়ির সামনে বসে থাকি
মুড়ি আর মিছরি নিয়ে মানুষেরা খুব তাড়াতাড়ি হাঁটে
ছায়ার ভিতর ছায়া দীর্ঘতর হয়
বিদেশী মেয়েরা কুকুর নিয়ে ঘুরতে বেরোয়।আমিও হাঁটতে থাকি
পিছোতে পিছোতে একটা খাদের ধারে এসে দাঁড়াই
একটা চোখ নেমেই যায় অন্ধকারের ভিতর।



No comments:

Post a Comment

গুচ্ছ কবিতা।।তৈমুর খান ।।

সমস্ত যুদ্ধের পর   অনেক মৃত্যুর পর এই বেঁচে থাকা  হেসে ওঠে মাঝরাতে  কোনও পিয়ানোর সুরে  খোলাচুল উড়ে আসে তার  বুকের ভেতর থেকে জ্যোৎস্নার ফণা ...