Showing posts with label অমিত চক্রবর্তী. Show all posts
Showing posts with label অমিত চক্রবর্তী. Show all posts

June 26, 2022

অমিত চক্রবর্তী

 আধঘন্টা নারীর আলস্যে


           “যে সব খবর নিয়ে সেবকেরা উৎসাহে অধীর,

              আধঘন্টা নারীর আলস্যে তার ঢের বেশি পাবে” – বুদ্ধদেব বসু

 

আধঘন্টার আলাপ, আলস্য বোধহয়, কিন্তু সেই কফিছাপ,

খুঁটিয়ে দেখা চড়ুইশিল্প, শার্টের হাতায় লেগে থাকে দাগ

কৌতূহলী চোখের জন্যে। দুজনে কথাটার মাঝখানে যে ফাঁক,

সেই স্পেসে এখনও ডানা মেলেনি যশ বা অমরত্ব,

টানলে বাড়ে সেই ফেব্রিক। শূন্যতার বিশেষ উপাদানই

এই। আমি একবার আঙুল তুলে দেখিয়েছিলাম উড়ে যাওয়া

পাখি, তার সঙ্কোচ, মুখটা একটু খোলা খিদেতে –

 

এনট্রপি জিতে যায় শেষে আমাদের আধ ঘন্টায়, বিরহও,

ঠোঙা ফেঁসে বাদাম গড়িয়ে পড়ে, চানাচুর,

দ্রুত গড়ায় তারা ঢালুতে তরল, কিন্তু থেমে গেলেই জমাট

বা সান্দ্র, মুখে বিদেশি ট্যুরিস্টের বোকা বোকা হাসি।

 

সত্যিই কি তুমি আমাকে কুড়িয়ে গার্বেজে ফেলে দেবে?







February 27, 2022

অমিত চক্রবর্তী

 রঙচটা


ভিজে রাস্তায় তেলের প্যাচ

আসলেই চ্যাপ্টা হয়ে যাওয়া বুদবুদ কিন্তু সে

অন্তত আলো তাই ভাবে

যখন বাহার তৈরি করে সঞ্চারে বা ব্যতিচারে,

যেন ফেনা, যেন প্রজাপতির পাখায় পাখায়

রঙমশাল।

  একই কৌশল আলোর, কিন্ত ঘৃণিত

হয়ে ওঠে তেলের প্যাচ বা ভেজা রাস্তায় পেট্রোল,

মুখ থুবড়ে তেল, সিঙ্কে ব্যাড়বেড়ে

চামচ, হাতা, লম্বা সরু কাচের গেলাস।


 ঘৃণিত হয়ত পাখায় রং বেশি বলে

অথবা জলের সম্মেলনে বিদেশি বা রঙচটা,

অন্যরকম ভাষা, অন্যরকম অ্যাকসেন্ট।

তারপর ঘৃণা শেষ হলে,

সাবান জলে ধুয়ে গেলে সেই প্যাচ,

তারা এখন ধূপধুনো দেয় রোজ, গান গায় বেসুরো, বেতাল,

শেষে একটা স্ট্যাচু বানায় স্মরণে - বাহারী

রঙের অনেক ছোপছোপ সারা গায়ে,

দাঁড় করানো চৌরাস্তার মোড়ে।



January 30, 2022

অমিত চক্রবর্তী

জমা লহরী, অন্তরঙ্গ ঘনিষ্ঠ


অন্ধকারে যখন বরফ জমে সেই লেকে, স্তব্ধ স্রোতের বাতাস

একটু গরম থাকে, জমা জলের লুকোনো তাপ পেয়ে।

এই ধরণের উষ্ণ বাতাসে আমি চাইলেই ভাসতে পারি

প্রাচীন কামানের মত, বারুদ নেই, গোলাগুলি নিঃস্ব,

শুধু দর্শক মাতানো সংবাদ এখন, সার্কাস সার্কাস।

প্রতিটি জমা লহরী এখানে এক ধরণের সঙ্গীত,

সেই যে তুমি বলেছিলে সামারে, পালগুলো খুলে নাও

রঙচটা নৌকোটার, নিষ্ক্রিয় ঘুরুক সে এবার এলোমেলো –

 

সেই সব অন্তরঙ্গ, ঘনিষ্ঠ কথাগুলি ইনকিউবেট করেছে

বুকের গরমে, পুঙ্খানুপুঙ্খ সাজানো আছে এখন

তুষারলিপি সঙ্কেত বা তথ্যের বাহারে। শব্দ এখানে দ্রুত যায়,

ভাষা টপকে, উপভাষা, ডায়ালেক্ট, বাগধারা টপকে

দ্রুত যায়, আচমকা হামলা আসে ইমেজারি সংলাপ

অথবা আর্তির। ডেসিবেল আবার বাঁধ পেরোয়,

বালির বস্তা, লেভি ছাপিয়ে।

 

এ অঞ্চল তাহলেও আমার খুবই প্রিয় রয়ে যাবে,

জমা লেকটিও দেখি বন্ধুসুলভ,

তার নাম রেখেছি দধীচি।


August 29, 2021

অমিত চক্রবর্তী

 বাবা


আমি আক্রোশে ভেঙেছি তাঁর একমাত্র ছবি

কেন তুমি নিয়ে যাওনি মাঠে, পেলে যখন খেলতে এল

ইডেনে? কেন তুমি নিজস্ব পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত, চলে গেলে

ধ্বনি শুনে স্বর্গের গেটে, না কি লোভে পড়ে পারিজাত ফুলের?

কেন তুমি বুকে তুলে নাওনি ধড়

চমকে ফেলে দিলে মুন্ড ভুমিতে ধুলোয়

মেঘকালো সেই আজগুবী সন্ধ্যায়?

ফিরে এসো বাবা, আমি তো এখন তোমারই বয়সী, কবে থেকে

ভাঙছি তোমার ছবি, কেন তুমি একটুও অস্থির নও,

চলে গেছ কতদিন আগে, ছ’ বছর বয়েসে, বাবা,

এখন স্বপ্নে এলে তো আর চিনতেও পারব না। 



July 31, 2021

অমিত চক্রবর্তী

মিথষ্ক্রিয়া



‘আমি ডুবতে রাজি আছি’।

জানো ডুবতে? জানা যায়? সঞ্চারী মানুষীর বক্ষে

দু’বেলা যে একতারা বেজে যায়, তুমি শুনেছ তার বোল?

নিয়েছ কি মাটির ঘ্রাণ? না কি তুমি শুধু দুন্দুভির খোঁজে –

ডুবতে গেলে হাঁটু কেঁপে যায় কিন্তু, ‘আমি তরল হয়ে যাচ্ছি

বহমান, আবহমান

আমার চোখে তুমি ঘোর দেবে না, দেবে না বলছি’

বলতে হয়, খুব অস্পষ্টে কানে কানে।



এ শতাব্দীর সেরা চুমুটা আমি দিয়ে ফেলেছি সোনালিয়াকে।

তাই হৃদয় এখন ঘোলাটে,

হৃদপিন্ড পুরোনো পেশী

যা চাই তাই পেতে পারতাম,

তবু পুনর্জন্ম চেয়েছি এখন –

তার সব ব্যথা, দুর্বিপাক নিয়ে

আজ আমার পুনর্জন্মের প্রথম দিন।



আজ তুমি শ্রান্ত। আজ তুমি চুপ থাকতে চাও, অথচ

কেউ একটা পায়ে পায়ে ঘুরুক

নিয়ে আসুক এক ভাঁড় লপচু চা –

অথচ নাম ধরে কেউ ডাকবে না

অথচ জানাবে না চা এসেছে বেডরুমে

শুধু নামিয়ে দিয়ে সাইড টেবিলে, একবার আড়চোখে

চেয়ে

ছড়িয়ে দেবে তার ধমনীস্পন্দের নির্বাক সম্ভার।



May 30, 2021

অমিত চক্রবর্তী

একটা আশ্চর্য সুড়ঙ্গ


আজ সকালে পড়িমড়ি করে

একটা আশ্চর্য সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি আমরা

ইতিহাস না পড়ে, ইতিহাস না পড়ে

একটা আশ্চর্য সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে –

কেমন হত তুমি বলত

 

বাইরে কি এখন আলো – চোখধাঁধানো না আলেয়া

বাইরে কি এখন আগুন

অফুরন্ত না কাঠপোড়া –

তুমিই বল

 

সামনে বেড়াবতীর জঙ্গল

একটা আশ্চর্য সুড়ঙ্গ

একটা লম্বা টানেল ভিশ্যন …



March 28, 2021

অমিত চক্রবর্তী

 অকেজো

পলেস্তারা খসে পড়ছে, সদর দরজা হাট,অকেজো ভাঙ্গা বাড়ি –উঠোনে পা দিলেই কিন্তু সম্ভ্রম।

পাঁচ মিনিটেই আকর্ষণ,পর্যটন শুরু।এ বাড়িতে বিত্ত নেই, সাত বছরের মেয়ে দেখবে দাবায় তুখোড়,পাণ্ডব পুরোহিতের নাম জানে। 

জামা সাজানো আলমারি নেই, ঘর দালান সব বইতে ছড়ানো।তার সঙ্গে চোখে পড়বে বিশাল এক কাঁপা, যাতে জড় হচ্ছে

বিরোধী মনোভাব, মতান্তর, যত বিপরীত তত মশলা –রান্না চলছে, পাকদন্ডী পথে, পাতন করে।

একবার, একবার মাত্র আমি কাঁপানলে মুখ দিয়ে সারাংশ টেনেছি, কয়েক বিন্দু, সেই থেকে সংশয়ী মন,সোজা উত্তর দেখলেই পালাই, যাকে বলে একেবারে অকেজো

ওই বাড়িটার মতনই। 





January 30, 2021

অমিত চক্রবর্তী

জানি না কোন্ সমুদ্র বা অতল গহ্বরের দিকে

জানি না কোন্ সমুদ্র বা অতল গহ্বরের দিকে ছুটে যায়
আমাদের ছাতাপড়া মনগুলি -
পাক খেয়ে খেয়ে প্রতিদিন,সম্মোহিত জাগরণ বেশে।
চোখ বুজোলেই কিন্ত ছলাৎ-ছলাৎ সুর
বাঁ হাতে শাড়ীর পাড়, ডান হাতে রান্না,
ভারসাম্যে ইঁট থেকে ইঁট বৃষ্টিদিনের উঠোনে।     

জানি না কোন্ সমুদ্র বা অতল গহ্বরের দিকে ছুটে যায়
আমাদের সংসারী মনগুলি
মথ,পতঙ্গের মত ধাঁধা লাগা চোখে।
ক্রমাগত সময় পেরিয়ে সে সমুদ্র, গহ্বর হয়তো বা মিলে একাকার -
কোথায় যে উজ্জ্বল বনভূমি, রঙচটা নষ্ট ছবি
সবই দেখি নিশ্চুপ সময়ের বুনো শাসনে।

গুচ্ছ কবিতা।।তৈমুর খান ।।

সমস্ত যুদ্ধের পর   অনেক মৃত্যুর পর এই বেঁচে থাকা  হেসে ওঠে মাঝরাতে  কোনও পিয়ানোর সুরে  খোলাচুল উড়ে আসে তার  বুকের ভেতর থেকে জ্যোৎস্নার ফণা ...