কবিতার ল্যাব
এতটুকু শুকনো চারকোল আর মিশ্রণমতো অ্যামোনিয়া। প্রয়োজন হয়েছিল নীলচে ফেনার। চোখে মুখে মেখে যেভাবে নিজেকে জ্বালিয়ে নেওয়ার কথা ভাবা যেত অনায়াসে, সেভাবে হাত পুড়িয়ে ফেললে আর কখনো ধরা যাবে না মিনিবাসের পুরনো হাতল। অন্ধকার ঘরের আচ্ছন্নতা মাপার সময়ও ল্যাবে উপজাত মৌল হিসাবে জন্ম নিয়েছে এমনই কিছু কবিতারা। এরা আসলে গনগনে রোদ্দুরে সদ্য টাঙিয়ে দেওয়া একএকটি জামার নির্যাস। জন্মের আগে এরাই কেউ অক্ষরের শরীরে লাগিয়ে রেখেছিল পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেটের ছাই। পরীক্ষামূলক ভাবে কেউ সদ্য বিক্রিয়ার পরেই নির্ণয় করতে বসেছিল অজানা যতিচিহ্নের সঠিক যোজনী।
এতকিছুর পর আমি অপেক্ষায় রয়েছি। কবিতার ল্যাবে রোজ ইচ্ছেরা বড় হচ্ছে অসংখ্য টেস্টটিউবে; সংজ্ঞা নিরূপণের আগে প্রতিটি চরণের শেষে গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটকের ভূমিকা নেবে বলে। উপযোগিতা অনুসারে দাম ঠিক হচ্ছে তাদের। পর্যায় সারণীর সমস্ত কৃতিত্ব যথারীতি এড়িয়ে গেছে মেন্ডেলিফ। ১৬তম মৌলের ঠিক পরে নতুন শ্রেণীতে অবস্থান করেছে বিক্রিয়াজাত কবিতারা।
কবিতার ল্যাবে আজ জড়ো হয়েছে বানভাসি ফসল আর নুইয়ে পড়া বাতিল তলপেট৷ অন্ধকার আর অবিকৃত ইচ্ছেগুলোর সঙ্গে মিশ্রবিক্রিয়ায় এরা আঙুল তুলতে শিখছে চোখে। আজ হালকা শূন্যের থেকেও এরা সাহসী করে তুলেছে নিজেদের৷ এবার প্রয়োজনে বিক্রিয়ার ঠিক আগে দাবী করবে অবশিষ্ট শুকনো চারকোল। এরা জানে, আগামী সময়ে এরাই পুরস্কৃত কবির দিকে তুলে ধরবে অভিযোগের আঙুল।
No comments:
Post a Comment