March 28, 2021

তৈমুর খান

 উড়ন্ত জোকারের হাসিতে দার্শনিক চেতনা


নব্বই দশকেই বাংলা কবিতার যে নতুন পর্ব শুরু হয়েছিল তার চূড়ান্ত রূপ ফুটে ওঠে শ্রীজাতের কবিতায়। সমাজ এবং ব্যক্তিগত দুই পারিপার্শ্বিক নিবিড় ক্ষেত্র থেকে শিল্পী তাঁর জগৎ খুঁজেছেন। শব্দ, উপমা, মাত্রা, পর্ব, মিলের অভিঘাত যেমন বাহ্যিক প্রকাশে ধ্বনি সাম্যের অনন্যতা এনেছে, তেমনি বুদ্ধিদীপ্তির সঙ্গে আত্মরসায়নের স্বচ্ছন্দ অনুঘটন এক মৌলিক রূপটানে উপস্থিত হয়েছে। শ্লেষ, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের সঙ্গে আত্মতার ঘোর অভিনিবেশ সাবলীল ও সরাসরি আত্মপ্রকাশে কবিতা সজীব, প্রাণময়। সেখানে ভাঙচুর ঘটেছে, বক্রোক্তি বিরোধাভাসে জীবনের অনেক নঞর্থক শূন্যতা ধরা পড়েছে, তবু শেষ পর্যন্ত সদর্থক অস্তিবাদকেই খুঁজে পেতে চেয়েছেন। যে জীবন নিয়ে শ্রীজাত জন্মেছেন, যে পরিবেশ পরিস্থিতি তাঁকে বিচলিত করেছে, যে স্বপ্ন-চপলতা তাঁর দরজা খুলতে চেয়েছে, যে নারী-বন্ধুত্ব তাঁর মনোযোগ দাবি করেছে–

সেসব সম্পর্ককে তিনি আড়াল করেননি। জীবনের টানাপোড়েন অভাব-শূন্যতাকে আত্মস্থ করেই কামে-প্রেমে-স্বপ্নে-ভোগে-ত্যাগে জীবনকে উপভোগ করতে চেয়েছেন। নিজের অতীত আর বর্তমানকে নিয়েই তাঁর যাত্রা, ভবিষ্যৎ নয় মুহূর্তের আবেগে যতদূর নিজের ছায়া দেখতে পান, ততদূরই হাত বাড়ান, আর ততদূরেই উঠে আসে সময়ের স্বরলিপি। তাঁর ক্ষতগুলি উন্মোচিত হয়। গোপনতা প্রকাশিত হয়। নিজের প্রতি যেমন নির্মম, তেমনি সদয়ও। যে পথে ঠেলে দেন তা সবসময় সুখের নয়, দুঃখেরও, চোখের জলের, বেদনার এবং বিস্ময়েরও। এক কৌতুকের ভেতর দিয়ে পাঠককে নিয়ে যেতে চান, কখনো রূপকের ভেতর দাঁড়িয়ে থেকে সম্পর্ক নির্ণয় করেন। ব্যক্তি অনুভবের বারান্দায় চাঁদ-পৃথিবী-আকাশ-মাটি-গান এবং স্তব্ধতাও কবির সত্তায় অনিবার্য ভূমিকা হয়ে ওঠে। স্বপ্নের বিভূতি জাগরণের নিঃশ্বাসে পা-তোলা পা-ফেলা জীবনের ছন্দ-মুগ্ধতায় মিশে যায়। আত্মা শরীরের কাছে ধরা দেয়, ভাবনা মনের ফসলে  ফলে ওঠে, ব্যক্তির নিরিখে মানব-রস পরিবেশিত হয়। আদিরস কখনো কটুকথার তিক্ততায় ভরা, কখনো রসিকতায় হালকা, নাগরিক ভদ্রতায় সলজ্জ, কখনো আলাপী নিষ্ঠাবান। কিন্তু সবক্ষেত্রে কৃৎকৌশলে ধোপদুরস্ত, বিন্যস্ত, সুন্দর ও স্বভাবদক্ষ।


     'উড়ন্ত সব জোকার' বইয়ের ভূমিকায় শ্রীজাত জানিয়ে দিয়েছেন:

'এবার খেলা অন্যরকম হোক–

 জলখাবারের-গল্প শুনুক লোক

 তেল-আগনের কাছে।'


      তখন বুঝতে পারি আঁশবটিতে কুচিয়ে নেওয়া চাঁদের সঙ্গে আড়াইশো গ্রাম লাল-নীল আহ্লাদের কীরকম রান্নাবান্না। তারপরেই টাটকা কিছু ক্ষতও পরিবেশন করেন তার সঙ্গে। প্রতিনিয়ত আমাদের ব্যক্তি-অবয়ব যেভাবে কুঞ্চিত, দীক্ষিত এবং বিভক্ত হয়ে পড়ছে তাতে ঐতিহ্য উত্তরাধিকার এবং ধারাবাহিক বিশ্বাস বজায় রাখা কঠিন। তখনই অন্যতর খেলায় নামতে হয় আমাদের। জীবনকে অন্যভাবে পরিমাপ করতে হয়। তেল-আগুন দুই-ই দাহ্য-দাহক, অস্তিত্বের নিঃশেষ নির্যাস সেখানেই। বেঁচে থাকাটাই জলখাবারের গল্প। সুতরাং বিশেষণও তার জায়গার বদল করে। উপমানও উপমেয় হয়ে যায়। ক্রিয়াও তার বাহ্যিক  ক্রিয়া হারিয়ে ফেলে।কর্তাটি বিভক্ত মানুষ। সমস্তই ডিগবাজি খাওয়া উড়ন্ত জোকার। সেসব জোকারের হাসি তামাশায় কখনো কখনো দার্শনিক উক্তিও বেরিয়ে আসে :

'জীবন কিন্তু প্রেমদিওয়ানা, সাবধানে তার গায়ের গন্ধ শুঁকো–

বলছে আমায় উড়ন্ত দুই পাগল। জোকার দেরিদা আর ফুকো।'

                      (উড়ন্ত সব জোকার)


    এই প্রেমদিওয়ানা জীবনের কথাই বারবার ফিরে এসেছে প্রতিদিনের জীবনে। 'রঞ্জিনীকে লেখা চিঠি'তে রবীন্দ্রনাথের 'আকাশ ভরা সূর্য তারা' ব্যক্তির অকৃতকার্যতায় 'ঢপের আকাশ, সূর্য, তারা…' হয়ে যায়, আর সেই কারণেই 'স্বপ্নগুলোও বাস্তুহারা'। সুতরাং প্রেমের ইতি টেনে নিজেকে 'ফালতু লোক' বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তবু প্রেমকে বারবার শুঁকেছেন। দেহের স্বাদেই তাকে পেয়েছেন। ইন্দ্রিয়েই উপলব্ধি করেছেন– এরকম বোধ থেকেই লিখেছেন:

'এখনও লোক হাঁপায় আর টিকটিকিরা দেয়ালে মাথা কোটে

 এখনও প্রেম জনপ্রিয়। এখনও টবে গোলাপফুল ফোটে…'

                                      (ধর্ম)

           আর এই জন্যই কবি'র স্বীকারোক্তি:

'তোমার কথা ভাবলে আজও পুরুষাঙ্গ শক্ত হয়ে ওঠে'

           'ছোটদের চিড়িয়াখানা' বইয়েও কবির অনুভব:

 'দেখি জীবন কত ছোট'

 বলেই জীবনকে ভোগের নেশায় নামিয়ে দেন। কিন্তু ভোগের মধ্যেও সুখ থাকে না। 'চুমু বিষের চেয়েও তেতো….' হয়ে যায়। তখন সবই জৈবনিক, মানিয়ে নেওয়া জীবনের অভ্যাস ফিরে আসে। অলীক অবস্তুতে মিইয়ে যায় প্রাকযৌবনের স্বপ্ন:

 'আচার ভেবে চেখেছিলাম ক্ষত

 তুমিও চুমু ভাতের সঙ্গে খেতে

 এখন আমি কারিগরের মতো

 ছাইয়ের ঘর বানাই অ্যাশট্রেতে'

                           (ছেড়ে যাওয়া)


      প্রেমে আঘাত অভিযোগ সবই থাকে, থাকে বিচ্ছেদও। গরম-ঠান্ডা সম্বন্ধ। তবুও অভাবের দিনে চুমু খেয়েই বেঁচে থাকা যায়। কিংবা নাসির-শাবানা হয়েই থাকা যায় একটু দূরে দূরে। সব সময় সহজ লোকের মতো সবকিছু স্বাভাবিক ঘটবে তা তো নয়। ছন্দের মাত্রা বাড়া কমার মতোই জীবনও ঢালু পথ ছেড়ে উল্টো পথেও এগিয়ে যায়:

'খ্যাপা উল্টো স্রোতেই সাঁতরায়

 তার দু'মাত্রা তিন মাত্রায়

 কিছু যায় আসে না আজকাল'

                               (প্রেমপর্ব)


       এভাবেই 'ভোলামন পোস্টমডার্নিয়া' গেয়ে চলেছেন 'সন্দেহ তত্ত্বের গান'। নিজেকে নিজের মতোই উপস্থাপনা করেছেন। দেশ-কালের অসামঞ্জস্য পরিস্থিতিকে আত্মস্থ করেই সাময়িকের আরাম আহ্লাদেই তাঁর প্রাপ্তি বুঝে নিতে চেয়েছেন:

'এসো আমরা ঘুমোই একটু

এই শেষবার জড়ামড়ির অসহ্য আহ্লাদ

পায়ের নীচে ফালতু মাটি

      মাথার ওপর টেম্পোরারি চাঁদ…'

                              (জাজমেন্ট ডে)


    প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকেই দেখেছেন মন্দ কপাল, প্রতারক, যৌনব্যবসায়ী. নিঃসঙ্গতা– আর সে-সবই প্রাত্যহিক জীবনের এক-একটি প্রচ্ছদ, কাহিনির প্রেক্ষাপট। তখন মনে হয় এসব রঙ্গও আমাদের সভ্যতার ভঙ্গুর ছায়াচিত্র যা প্রতিনিয়ত ধ্বসে পড়ছে আর আমাদের অভিযোজন ঘটছে:

'সামনে রাস্তা।জল আগুনের কেচ্ছা

অন্ধকে পথ বাতলে দিচ্ছে বেশ্যা'

                                    (রওনা)


         বেশ্যার জীবনের পথ যেখানে রুদ্ধ, অন্ধও সেই বেশ্যার চোখে পথ দেখছে– এ যেমন স্বচ্ছ নয়, তেমনি অসম্পূর্ণও। সভ্যতার এই নিরবচ্ছিন্ন যাত্রায় কবিরও সদ্গতি এই কবিতাটির শেষ দুই চরণে:

'জানালা হাঁ মুখ। দেয়াল ভর্তি সাপখোপ…

নতুন বাড়ি, নতুন করে থাকব।'


     এখানেই জীবনকে মানিয়ে নেওয়া অথবা ভালোবাসা দুইয়েরই দেখা মেলে।


         বাস্তব সময়ের পরিধি কীভাবে আমাদের গ্রাস করেছে; মৃত্যু ধর্ষণ সন্ত্রাস প্রতিমুহূর্তে খবর তৈরি হচ্ছে; কত রকম টিভি চ্যানেল, প্রতিহিংসার এক ঝগড়ামাখা পৃথিবীর রূপ দেখতে পাচ্ছি চারিদিকে। বস্তা থেকে কাটা মুন্ডু বেরোচ্ছে। এসব দেখতে দেখতে টিউশনির রোজগার শূন্য ব্যক্তিটি নিজের কাছে ধরা পড়ে যান। তখন লিখতেই হয়:

 'শান্তি নেই। শান্তি নেই। শান্তি

 চাঁদের মতো কাটামুন্ড উঠেছে,

            উঠেছে কালো আকাশে…'

                                (প্রতিহিংসা)

       ঝলসানো রুটিৱ থেকেও ভয়ঙ্কর এই চাঁদ। উপমেয়টিই উপমান হয়ে গেছে এখন যুগের প্রেক্ষিতেই। পর্যবেক্ষণেরও এক সূক্ষ্ম মননে শ্রীজাত আমাদের ভাবিয়ে তুলেছেন।


        শুধু আড্ডাবাজ আত্মকথার ভিড়ে তিনি হারিয়ে যাননি; হই-হুল্লোড় দিনলিপির ভেতর থেকেও বেড়াল, সিংহ, সাপ, মুরগি,  ব্যাঙ, প্যাঁচা, বাদুড়, হায়না, বাঘ,পিঁপড়ে, কচ্ছপ, কুকুর, জেব্রা প্রভৃতি প্রাণীর রূপকে নিবেদন করেছেন নানা তথ্য। জৈবিক প্রবৃত্তির টানে সেসব নির্ণীত চরিত্রগুলির ভেতর নিজেও দাঁড়িয়েছেন। আত্মস্বরূপ উন্মোচন করেছেন। কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছেন, কিংবা কীভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তারও পরিচয় আছে। ছোটদের চিড়িয়াখানা তখন বড়দের এক-একটি আবিষ্কারে ভর্তি হয়ে গেছে। রূপকগুলি কী বলছে তার কয়েকটি নমুনা:

 সিংহ :

 'ঘুমন্ত, আমি ঘুমন্ত,

 আমি ঘুমন্ত

        তবু সিংহ!'


 মুরগি:

 'আমরা কিন্তু এই বাজারেও

 সস্তা এবং দারুণ খেতে!'


 ব্যাঙ:

 'ভেজা আড্ডা

 দুটো বন্ধু

 লোকে বলছে

 কূপমণ্ডুক ' 


 হায়না:

'যেমন আমি রক্ত চাটা শিখছি, তবে আস্তে

ওরও একটু সময় লাগবে ঘড়ির কাঁটা বাছতে…'


 বাঘ:

'এখন কী আশ্চর্য, আমার গায়ে, আমার মুখে,

আমার চলাফেরায়, অবিকল বাঘের গন্ধ।'


 কুকুর:


'আমিও কেমন কুকুর হয়ে গেছি

চাটার আগে শুঁকে দেখছি তোমায়'


        এভাবেই চিড়িয়াখানার জন্তু জানোয়ারেরা মানুষ হয়ে উঠেছে। এক-একটি চরিত্র লাভ করেছে আমাদের সমাজে। যাদের খুব চেনা, খুব কাছের ও বহুবার দেখা মনে হয়। এসবই উঠে আসে কবিতায়।


            অন্ত্যমিল, পর্বমিল এবং শব্দ ব্যবহারে ধ্বনিসাম্যের বহু  পরীক্ষা-নিরীক্ষাও শ্রীজাত  করেছেন। সব মিলিয়ে এমন এক অভিঘাত আমাদের দোলাতে থাকে, যাতে কবিতাপাঠে বিরক্তি আসে না, বরং দ্রুততার সঙ্গে এক গতিময় ধ্বনিঝংকারে ঝরনায় স্নান সেরে উঠি। 'বর্ষামঙ্গলে'র কবিতাগুলোতেও 'খুশিমাছ, ডিমের বিরহ' পড়তে পড়তে বাংলা শব্দার্থের এমন ব্যবহার আছে জানতে পারি। খুব সহজভাবেই শ্রীজাত আমাদের মরমে প্রবেশ করেন, আর মিলে-ছন্দে-সুরে আমাদের অমিলকে সুন্দরতায় ভরিয়ে তোলেন। জীবন ও জীবনের বৈপরীত্যকে নাড়িয়ে তোলেন।











সব্যসাচী পণ্ডা

 ধরিত্রী


তারপর যদি জন্ম পাই আরো একবার

যেন জন্মের সারল্য

তোর বক্ষে ঢুকে যাব

শ্বেত শুভ্র সুডৌলে চুপ করে বসে রব

স্বল্প আনত।


প্রজনন ক্ষন পার করে

তোর সকল সন্ততি

প্রথম কান্নার আলোড়নে আমাকেই তারপর 

চুষে চুষে খাক...পুষ্ট হোক....


এবং মানুষের মত মানুষ হোক।









সাত্যকি

সোয়েটার বিলাসী গন্ধে 


পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা হলে আবোল তাবোল অনেক কথা হয়   

কিছু মরচে পড়া শব্দও গা ঝাড়া দিয়ে উঠে পড়ে 

ল্যাম্পপোস্টের মত আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে যায় 

 

গায়ে গায়ে পিঠ রেখে চলে অর্ধ নিদ্রিত কথোপকথন

অদম্য উৎসাহে কালমেঘ বনের অন্ধকার থেকে উঁকি দেয় জোনাকি 

সন্ধ্যার বাতাস ঠায় বসে বারান্দার সিঁড়ি জুড়ে 

গায়ের চাদর থেকে নেমে আসে কর্পূর গন্ধ 

যাকে কোনো এক শীতের দিন খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল 

দেরাজের ভিতর থাকা সোয়েটারের গায়ে... 








রবীন বসু

 স্মৃতির সাঁতার


কত দূরের স্মৃতি তুমি আজ

মনের দোরে দিয়েছি খিল এঁটে,

তবু কেন তোমার অলীক সাজ

আমার বুকে রয়েছে যে সেঁটে।


পিছন ফিরে তাকাতে ভয় পাই

স্মৃতি যদি চলকে ওঠে মুখ,

আমি বলি, এবার পালিয়ে যাই

যেচে কেন ডাকব শুধু দুখ।


তবু দুঃখ হেঁটে আসে ঘরে

গভীর রাতে তোমায় মনে পড়ে,

আকুল হৃদয় চাইছে পেতে কিছু

তবু হাঁটতে পারিনা তো পিছু।


এমন কষ্ট সঙ্গী আমার থাকে

প্রতিদিনের বেঁচে থাকা দায়,

ভুলেও যে যায়না ভোলা তাকে

স্মৃতি কেবল সাঁতার কেটে যায়।





দীপ্তেন্দু বিকাশ ষন্নিগ্রহী

 অংক


সিঁড়ি ভাঙা অংকের শেষ ধাপে জোছনা লেগেছে

দেখো তোমার ছায়ায় 

পাখিরা বাসা বাঁধছে...  তারা উত্তর চায়


একে একে নিভে যাচ্ছে তারা

এরপর ভোর হবে জেনেও

সিঁড়ির শেষধাপে এসে উত্তর খুঁজেছেন যুধিষ্ঠিরও... 








সুকুমার কর

 ফাঁদ 

 

রোজ রোজ মরে যাই কোলাহল শেষে 

 এ দেহ শোকের বাড়ি চুপচাপ ভাবি 

  রাধা রাধা বলে শ্যাম বাজাও বাঁশরী 

 পেতেছি প্রেমের ফাঁদ ধরা দেবো তায় 

  কদমের ডালে দেখো শ্রাবন ঘনায় 

   শুকিয়ে পুড়িয়ে মারে রাধার চেতনা 

   বিরহের এই পথে নিত্য আনাগোনা

          

সব যুদ্ধের শেষে 

      

সব যুদ্ধের শেষে 

ভালবাসা গুছিয়ে নেয় সংসার  |

ঘোড়ার খুরের শব্দ তখন অতীত। 

উত্তরের জানালা খুলে দাও, 

বেনো জল ঢুকুক। 

অন্ধকারের গর্ভে আলোর জন্ম হলে 

বেথেলহেমের রাস্তায় যীশুর 

পদধ্বনি শোনা যায় |

মহামতি অশোক ধ্যানমগ্ন হন |





সমাজ বসু

 দিন


সবার জন্য একটা নির্দিষ্ট দিন থাকে--

বালি খুঁড়ে খুঁড়ে জল তুলে আনার চেষ্টাতেও আসে না, 

সেই নির্দিষ্ট দিনের কোন তারিখ নেই--

মাস কিংবা বার-

তোমাকে ঠায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষাও করতে হবে না,

হঠাৎ করেই বাড়ি ফেরার পথে শুনবে-

কালো বালিতে মুড়ি ভাজার মত অনায়াস ফুটেই চলেছে

সেই নির্দিষ্ট দিন।


বিজ্ঞাপন


এখন অতি সন্তর্পনে পা রাখলেও শব্দ হয়,

চারিদিকে সারিবদ্ধ পিঁপড়ের মুখের বিপদ

পড়তে পড়তে বদলে যাচ্ছে আমাদের দিনলিপি।-

তীব্র অনিশ্চিত এক ভয়ের বিজ্ঞাপন লেপ্টে আছে

মিনিট আর ঘন্টার শরীরে-

আমরা এগিয়ে চলেছি মূক বধির বধ্যভূমির দিকে।





সোমনাথ বেনিয়া

 আর্সেনিক 


তারপর দিন গুজরান, অনেকদিন, কীভাবে

যে উপত্যকায় বুনোফুলের গন্ধে মেঘের বাসরে -

                 ভরা গ্রীষ্মে চাতকের অন্তিম নেমেছিল ...

ঠোঁটের ফাঁক গলে দশক-শতক পেরিয়েছে

কিছু নিরুপায় চাউনির তর্জমা নুড়ি হয়ে গেছে

পর্ণমোচী হাওয়ায় কেঁপেছে সম্পর্কের সুতো

হাতের উপর হাভাতে তিল শীর্ণ, অন্ধকারাচ্ছন্ন

সেভাবে শাসন কোথায়, উধাও দৈনিক রুটিন ...

যদিও দুরাচার ছিল না, কথায় অল্প-বিস্তর আর্সেনিক

ভাঙা মাস্তুল দেখে ভেবেছিলাম পোতাশ্রয়

এগিয়ে যেতেই কোমরে স্পর্শ করে স্নাতক ক্লান্তি

স্বপ্নে সিঁড়ি বেয়ে চাঁদে ওঠার বাসনা নিরন্তর

গলা শুকিয়ে গেলে শ্রাবণপুরের রিমঝিম অনতিদূরে ...





সুব্রত চক্রবর্তী

 বেলা শেষে 

              

রাস্তার পাশে পলিথিন পেতে বুড়িটি বসেছে।

বুড়ির পাশে পা ছড়িয়ে বসে তরতাজা সব্জিগুলি।

ডানপাশে কোলের ছেলের মতো শুয়ে লকলকে পুঁই।

ছেলে বেড়ে উঠলে বউ আসে ঘরে। 

নধর কুমড়ো বামপাশে সুখী বউমার মতো, 

স্বামী সোহাগে সুখে থাকতে ফ্ল্যাট উঠে। 

কোল ঘেঁষে আদুরে নাতিটি 

নেওটা পালংশাক। 

ফ্ল্যাট থেকে নাতির হাসির শব্দ মোবাইলে আসে। 

নাতনির বিয়ের বয়স হয়।

পাকা কামরাঙ্গা তার লাজে রাঙা গাল।

ফ্ল্যাট বাড়ি আলো- সাজে। 

প্রিয় পরিবার বুড়িকে বসায় ফ্ল্যাটের পাঁচ হাত বারান্দায়। 

বুড়ি রোদবেলা নেড়েচেড়ে দেখে।

গ্রিলের ফাঁকে উঁকি মেরে সব্জির ক্ষেত খুঁজে। 

সাজানো সংসারে বেলা গড়ায়। 

দিনের শেষে ডাঁটি ভাঙা চশমার কাঁচে

চুপসানো করলার ঝুড়িতে বুড়ি নিজেকেই খুঁজে। 






ঋভু চট্টোপাধ্যায়

 উদাসীনতার বিচিত্র ঈশ্বর                        


                              ১

এক একটা হৃৎপিণ্ড উল্টে মজা দেখবার নামই

হয়ত গনতন্ত্র, অথচ সংজ্ঞা লিখতে বললেই

সব বড় নাম।সেই একটা কথা,‘এক হাত কাঁকুড়ের

তোরো হাত ড্যাশ’ কথাগুলো কোর্ট এবং আন কোর্ট,

 প্রতিদিন ছাগলের এক নম্বর বাচ্চা সবার সামনে

কয়েক ঘন্টা পাগলামির সাথে সংসারের নামে।

দেশ চলে, দেখতে না পারলেও চোখ দিয়ে রাখি,

কারণ চোখের কোল ঘেঁষে একটা উপত্যকা চলে গেছে,

তার তীরে জমির আলপথ পেরিয়ে এক পা একপা করে

দেশ ছাড়ছে তুলসী তলা ভিটে মাটি। সব কিছু দেখে ভান

করে অনশন। গঙ্গা জলেও রাম মিশিয়ে পানের মধ্যেও

একটা ব্যাকরণ আছে। ঘুরতে পারলেই চুপ,

না পারলে চেটে চেটেই চটি পরিষ্কার।

যাত্রাপথের পিঠে হৃৎপিণ্ড কোমরে ফুসফুস টসটস

করে ঝরছে।কান্না এখনও স্তনের প্রত্যাশি।


                                  ২

তারপরেই যাত্রাপথ, জঙ্গল মানে এক একটা আস্ত আকাশ,

গিলে খাচ্ছে পাতার পরম্পরা, ভালো লাগা চাপানো থাকছে1

গোষ্ঠীর মঙ্গল গ্রহে।এই রকম কি আদেশ ছিল, কোণে কোণে 

লেগে থাকা অধ্যাত্ম তিলক,আর তার পাশ ফিরে খুঁজতে চাওয়া 

ঈশ্বরের পাথর বিগ্রহ দেখেই এক হাত চেষ্টা এখানেই নাম ধাম

আর গোত্র মিলিয়ে দেখার চেষ্টা কোথায় বিশেষণ লাগে

কোথায় মুছে যায় মেঘ থেকে বৃষ্টি আত্মা।

                                        ৩

কাকে বয়কট বলে, জানা নেই কলার চার দেওয়াল

শুধু দরজা জানলা শরীরে আটকে থাকা টুকরো ফরাসি শ্বাস,

ঐ তো শহর পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে জীবনী স্রোত, ফিরে যাব 

পাশ কাটিয়ে পৌঁছে আগুন আর ছাইয়ের ধ্বংসস্তুপ থেকে চিৎকার

আর মাথা কাটার একটা সমীকরণ থাকে, যেমন থাকে সেই গনগনে 

আগুন আর ধ্বংসপ্রপ্তি, যেভাবে মৃতদেহ বানানোর একটা কারখানার

আরেকটা নাম হয় ধর্ম, আর ফিরে তাকানোর আরেকটা পৃথিবীর বুকে

ঝরনার বারান্দা থাকে তার নাম ঘাস।

                                     ৪


যতই ঘৃণা হোক জানি সেই সন্ধিরেষ ছুঁয়ে যাবে ত্রিনাদ সকারে,

শরীর বর্ণময় তবুও উদাসীন উপাসনার কোল ঘেঁষে যে স্রোত খাবি খায়

তাকে ছুঁয়েই এই উত্তরের মাতৃ জঠর, যা ঘাম যা রক্ত যা কষ্ট

যা ক্লেশ সবই শিবমস্ত গিলে খেয়েই তিনধাপ, পুড়ে যাক আমার

শরীরের কোণ, অকার উকার মকার তারপর আমার থেকে বিভাজিত

আমি যোগ বিয়োগ গুন ভাগে।শেষ নেই শুরুর মাঝে আরেক

নতুন রাস আর জন্ম।

                                        ৫

ভগ্ন শরীর ঢাকা ঠাণ্ডা কানের ভিতর থেকে ছবি স্রোতে

কে বলেছে ভোর হয়নি, শরীরের বাঁ’দিকে অন্ধকার নামে

ডানদিক কার্টুনে ঈশ্বর। না এখন ও পর্যন্ত মেঘ পোড়াতে হয়নি।

দিব্যি বৃষ্টির ফোঁটায় শরীরের গ্রীষ্মকালে ফুল জন্মায়।

গাড়ি পোড়াইনি কোন আগুন স্রোতে,  শুধু নিজেরই ছাই,

আমি তো শুদ্ধ, চুপ নয়।পাশের দেশে লাগিয়ে দেওয়া আগুনের

আঘাত, শরীর ঠাণ্ডা তবুও ওদেশে চেয়ার আছে,

ফুল ফল রক্ত কঙ্কাল, ভালো থেকো আমার শরীরে ছাই,

ভালো থেকো মন মেজাজ, ধন্যবাদ এখনও পোড়াতে শিখিনি বলে।






সুচেতা মন্ডল

চলো ফিরে যাই


রাস্তার বাম দিকে দু নম্বর বাড়িটির  নাম দিয়েছি আদরবাসা।
দক্ষিণের বারান্দায় রোদ এসে গল্প করে,
শান্ত হয়ে বসে  থাকে ভিজে সকাল।

ছোট দুটি আসন পাতা 
বসেছি 
মুখোমুখি।
ভোরের বৃষ্টির কাছে চলো ফিরে যাই।
পাশাপাশি চলব আরও কিছুটা পথ।

শান্ত বারান্দা পড়ে আছে 
একা,
চলো আবার বেরিয়ে পড়ি।







অমিত চক্রবর্তী

 অকেজো

পলেস্তারা খসে পড়ছে, সদর দরজা হাট,অকেজো ভাঙ্গা বাড়ি –উঠোনে পা দিলেই কিন্তু সম্ভ্রম।

পাঁচ মিনিটেই আকর্ষণ,পর্যটন শুরু।এ বাড়িতে বিত্ত নেই, সাত বছরের মেয়ে দেখবে দাবায় তুখোড়,পাণ্ডব পুরোহিতের নাম জানে। 

জামা সাজানো আলমারি নেই, ঘর দালান সব বইতে ছড়ানো।তার সঙ্গে চোখে পড়বে বিশাল এক কাঁপা, যাতে জড় হচ্ছে

বিরোধী মনোভাব, মতান্তর, যত বিপরীত তত মশলা –রান্না চলছে, পাকদন্ডী পথে, পাতন করে।

একবার, একবার মাত্র আমি কাঁপানলে মুখ দিয়ে সারাংশ টেনেছি, কয়েক বিন্দু, সেই থেকে সংশয়ী মন,সোজা উত্তর দেখলেই পালাই, যাকে বলে একেবারে অকেজো

ওই বাড়িটার মতনই। 





ইন্দ্রাণী পাল

 ঋতুসংহার


মাথার ভিতরে জমে আছে একরাশ মেঘ 

সারাদিন টিপটিপ বৃষ্টি

প্রত্যেকের মাথার ভিতরে থাকে নিজস্ব কোনো ঋতু

বৃষ্টিতে পালতোলা নৌকা ভাসায়


যক্ষ বা কুবের কারোরই প্রেয়সী নই আমি

চিঠি-ফিঠির আশা কবেই ছেড়েছি

বসে থাকি ময়দানের ঘাসে


রাতবাতি নিভে এলে ঘুমে চোখ ভারি হয়ে আসে


তারা খসা রাতে


তোমার জামায় ঝুঁকে পড়া রাত্রি মুছে গেছে

বস্তুনিরপেক্ষতা থেকে দূরে মিটমিট করছে

                                                একটি তারা

কুন্ডলি পাকিয়ে শুয়ে আছি

আর নিজের আদল বসিয়ে দিচ্ছি এর ওর মুখে


ঋতু পরিবর্তনের মোহের ভিতরে গছিয়ে উঠছে

       নানা রকমের ডালপালা ।


রোমন্থন 


কোনো কোনোদিন তোমার দেহের পাশে

 নিচু হয়ে বসি।পেলমেট,পর্দায় বিবর্ণ রাত

নিচু হয়ে ঝুঁকে পড়া জবা

আর একটা চাঁদ কেবলই অনুসরণ করে

হাওয়া এসে ঢুকে পড়ে ঘরের ভিতর।


এসব কথা যখন আমি লিখে রাখি

দূরের একটা মহাদেশে আলো জ্বলে ওঠে।










তুষার ভট্টাচার্য

 ভোরের কৈশোর


চির দুঃখের অক্ষরগুলি আমি পুঁতে দিই 

বোধি বৃক্ষের শিকড়ে ;

ভালবাসার গোপন চিঠিগুলি

ভাসিয়ে দিই নদীর জলে ;

বর্ষার মেঘে ঢাকা বিষণ্ণ চাঁদের ম্লান 

আবছা বুকে আমি আঁকিনা আর

কোনও শ্রীময়ীর মুখ ;

সবকিছু তুচ্ছ ভেবে

আমি মাঞ্জা দেওয়া ঘুড়ির সুতোয় উড়িয়ে দিই  দুঃখী জীবন ;

তারপর আমার দু'চোখে উড়ে আসে

ভোরের কৈশোর।


দিকশূন্যপুরে 


অপমানিতের সমস্ত দুঃখ নিয়ে একদিন চলে যাব দিকশূন্যপুরে নিরুদ্দেশে ;

যাবার আগে তোমার 

দু'হাতে দিয়ে যাব ভালবাসার

স্মৃতির পতাকা।






শঙ্খ চক্রবর্ত্তী

 

দিনশেষে বুঝতে পারি পুরো দিনটি বৃথা কাটিয়েছি।এমনি করে কতগুলি দিন পেরিয়ে গ্যাছে, কত রাত পেরিয়ে গ্যাছে

তখন ভাবা হয়নি এতকিছু কিন্তু এখন ভাবতে সাহস করি।

ক্লান্তি বলতে শরীর যা বোঝে তার চেয়ে বেশি মন বোঝে;

আমি বুঝি হতাশা, হতাশারও একটা নিজস্ব টান আছে–

প্রতিটি অন্ধকারে হতাশাই পাশে থাকে কেবল আর থাকে তারা যারা সহানুভূতির পর্দা চাপিয়ে পিঠে হাত চাপড়িয়ে উপদেশ দেয়। 


আমার নিঃস্বতা দিনে দিনে আমার চেয়েও বেশি আমাকে আপন করেছে, এখন টবে লাগানো ফুলগাছে হাত দিতে ভয় করে। যদি ফুলটি মারা যায় ! 

সমস্ত রাত একলাটি জেগে থাকি জানালা বন্ধ করে

কোনো আলো কোনো জোনাকি কোনো স্বপ্ন আমার জন্যে অপেক্ষা করে না জেনে ঘুমের চেষ্টা করি। সেই মুহূর্তে মানসিক ক্লান্তির চেয়ে বড় আপন আর কেউ হয় না। আমি অঘোর আত্মচর্চায় মগ্ন হই,

 জানালার রড বেয়ে আমার ঘরে এগিয়ে আসা অর্কিডটি অপেক্ষা করে কখন সূর্য উঠবে, বিড়ালটি ঘুমিয়ে থেকে স্বপ্নে চমকে চমকে ওঠে, আমি সব বুঝি স্নেহ-যত্নে। কিন্তু তাতে কি আমার শান্তির কোনো সুরাহা হয়?


আসলে প্রতিটি আপেক্ষিক প্রেম নিজেকে নিয়ে গড়ে ওঠে

যেখানে ক্যালকুলাস বোঝার চেয়ে সূর্যমুখীর আলোকপ্রেম বোঝা কোনো অংশে কম জটিল নয়।





রবি শঙ্কর মন্ডল

 যা ও য়া


ছেড়ে যাওয়ায় দ্বিপাক্ষিক ক্লান্ত শুন্য

অধিক টান এপার ও ওপার 

স্নেহের মিছিল ভেঙে,কপালে সুখ দিলো খিল। 


ওই শেষ ট্রেনে প্রিয়র ফিরে যাওয়া, 

অন্তমিলে অবুঝ গারদ মন 

অবসরে। 


আদ্রতা মাখা-অপেক্ষা 

শহরের সুরে স্মৃতির মাখামাখি, 

অবিচল...

ডিভোর্সি ঘুম

জোর করে আগলে সর্বনাশসম। 


একতরফা পরিযায়ী কান্না

থেকে যাওয়ার ছুমন্তর মিথ্যে, 

ছুঁয়েদিলেই ভ্রূণদগম। 






আবদুস সালাম

আমি ও আমরা


গন্তব্য এখন বহুদূর

ক্রমশ ছিটকে পড়ছি মানবিক পথ থেকে


উলঙ্গ অধিকার ছিনিয়ে নিচ্ছে বিশ্বাস

আকন্ঠ পিপাসা নিয়ে অতৃপ্ত ভিক্ষুক


ভড়ং


সমস‍্যা গভীর হলে রাষ্ট্র সংঘ  হুংকার ছাড়ে

সবাই জেনে গেছে ওটা দাঁত ভাঙা বাঘ

চৈতন্য লোপাট হয়


অবুঝপানা


ভুতুড়ে আঁধার নেমে আসছে পৃথিবীর জঙ্গলে

পরিচয়হীন স্টেশনে থামে পরিযায়ী ট্রেন

ভূতের রাজত্বে কে রাজা কে মন্ত্রী বোঝা বড়ো দায়


পড়শী কথা


ভিন্নতর স্বাদে  বুনে দিই কষ্ট কথা

পড়শী বাড়ির প্রশ্নবান ছুটে আসে প্রতিক্ষার জানালায়

ভেসে যায় উদাসীন নির্মাণ


প্রচেষ্টা


আমাদের সামাজিক নদী প্রবাহিত হয়

টুকরো টুকরো দুঃখগুলো ভাসে ঘোলাজলে

সবুজ কালিতে লিখে রাখি আবেদন

পদচিহ্ন এঁকে রাখি নদীপাড়ে









গুচ্ছ কবিতা।।তৈমুর খান ।।

সমস্ত যুদ্ধের পর   অনেক মৃত্যুর পর এই বেঁচে থাকা  হেসে ওঠে মাঝরাতে  কোনও পিয়ানোর সুরে  খোলাচুল উড়ে আসে তার  বুকের ভেতর থেকে জ্যোৎস্নার ফণা ...