September 06, 2020

চিত্তরঞ্জন গিরি

 আমার বাংলা ভাষা


তুমি যদি আকাশ হও। আমায় তোমার বর্ণমালা করে দিও।

আমি বর্ণমালা হয়ে ,নক্ষত্রে নক্ষত্রে -তোমায় আমি সাজাবো ,দিগন্ত জুড়ে, তোমার বিছানো আঁচলে ।


তুমি যদি সমুদ্র হও। আমাকে তোমার ঢেউ করে দিও।

আমি ঢেউ হয়ে উজান স্রোতে পাড়ের সাথে মিতালী করবো। কবিতার ছন্দ উগরে দিয়ে বিরহের কাব্য কথা বলব।

তুমি যদি নদী হও। আমায় তোমার পালতোলা নৌকা  করে দিও।

 আমি নৌকা হয়ে ভাটিয়ালী গান শোনাবো। দাঁড় বেয়ে তরঙ্গ লহরী এনে, উতল হাওয়ায় উদ্যত কন্ঠে, সুরধ্বনি ছড়িয়ে দেব।

তুমি যদি বাঁশি হও। আমায় তার সুর করে দিও।

আমি সুর হয়ে কুঞ্জে অলি গুঞ্জরিয়ার বাউল মনে প্রেম কাব্য ছড়িয়ে দেব। সোহাগ নুপুরে নেচে উঠবে কত ময়ূর ময়ূরীর পেখম। দোদুল দোলায় কপোত-কপোতি তরুলতায় মনের কথা কুড়িয়ে নেব।

তুমি যদি তুলসীতলা হও। আমায় সাঁজের প্রদীপ করে দিও। বাংলা ভাষা বর্ণমালায় অক্ষরে অক্ষরে সাজাবো তোমার সাধের উঠোন। আলতা পরা গৃহবধূর পায়ে পায়ে আমার আত্মায় জাগরিত হবে শত সহস্র স্পন্দন।

তুমি যদি চান্দ্রমা হও ।আমায় তুমি তোমার চন্দ্রকলা  করে দিও। রোশনায় রোশনায় মন্দ্রিত ধারায় মানব ধর্মের সৌহার্দ্য ভাতৃত্ববোধ সকল সত্তায় হৃদয়ে হৃদয়ে এঁকে দেবো।

তুমি যদি আগ্নেওগিরির হও আমাকে  তোমার গরম লাভা বা ম্যাগমা করে দিও। আগুনের উত্তাপে আমি পৌঁছে যাব প্রতিবাদের ভাষায়। পুড়িয়ে মাড়িয়ে মুছে দেবো প্রতিবন্ধকতার জঞ্জাল। হৃদয়ের এই আশ্বাস টুকু থেকে যাক বাংলা মায়ের অমৃত বসুধায়। 

No comments:

Post a Comment

গুচ্ছ কবিতা।।তৈমুর খান ।।

সমস্ত যুদ্ধের পর   অনেক মৃত্যুর পর এই বেঁচে থাকা  হেসে ওঠে মাঝরাতে  কোনও পিয়ানোর সুরে  খোলাচুল উড়ে আসে তার  বুকের ভেতর থেকে জ্যোৎস্নার ফণা ...