অরুন বালকৃষ্ণ কোলাটকার (১৯৩২-২০০৪) ষাটের দশকের মারাঠি কবি।মারাঠি এবং ইংরেজিতে লিখেছেন।বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ "জেজুরি" (১৯৭৬),যার জন্য পরের বছর তিনি কমনওয়েলথ পোয়েট্রি পুরস্কার পান।পোস্ট মর্ডান এই কবির কবিতা ভারতীয় কবিতাকে এক ভিন্ন ধারায় পরিচালিত করে।
অনুবাদক অভিষেক সৎপথী।
মনোহর
দরজাটি খোলা
মনোহর ভেবেছিলো
হয়তো আর একটা মন্দির।
ভিতরে গিয়ে
আশ্চর্য হল
সে কোন ভগবান দেখতে চাইছে?
দ্রুত পিছু ফিরলো
একটি বাছুর প্রশস্ত দীঘল চোখে তার দিকেই চেয়ে
এটা তো কোনো মন্দির হতেই পারে না
সে বলেছিল
এটা শুধু একটা গোশালা,আর কিছু না।
চৈতন্য
চৈতন্য বলেছিলেন জেজুরির পাথরগুলি
আঙুরের মতো মধুময়।
সেই পাথর মুখে নিয়ে কড়মড় করে চিবিয়ে
তিনি থুতিয়ে ফেলে দিয়েছিলেন ভগবানের দিকে।
( শ্রী চৈতন্যদেব মহাপ্রভু ১৫১০-১১ খ্রিস্টাব্দে
জেজুরির খান্ডোবা মন্দির ভ্রমণ করেছিলেন।)
গর্ভ মন্দির
গর্ভ মন্দিরে ভগবান আঁধারেই থাকে।
তুমি পুরোহিতের দিকে একটা দেশলাই বাড়িয়ে দিলে
এক এক করে মূর্তিগুলি আলোর সামনে আসে।
চমকিত ব্রোঞ্জের ঔজ্জ্বল্যে
স্মিত পাথরগুলো বিস্ময় রহিত।
দেশলাই কাঠির জ্বলে ওঠা আর নিভে যাওয়ার
মধ্যবর্তী প্রতিক্ষণ
কাঠামো গুলি আসে
আর অবয়ব ছায়ায় হারিয়ে যায়
তুমি জিজ্ঞাসা করলে,"এটা কোন মূর্তি?"
পুরোহিত জানালো "দেবী অষ্টভূূজা।"
কাঠিটি নিভে এলো
তুমি হাতগুলো গুনলে
প্রতিবাদ করে বললে,"না,অষ্টাদশভূজা।"
সবকিছুই এক,পুরোহিতের কাছে আটটিই হাত!
বাইরের আলোয় বেরিয়ে এসে একটা চারমিনার ধরালে।
ছেলেগুলো বিশ ফুটের কচ্ছপের ওপর খেলা করছে।
চ্যুতি রেখা
কোনটা ভগবান
আর কোনটা পাথর
বিভাজনকারী কোনো লক্ষণরেখা
যদি থেকে থাকে
জেজুরিতে সে রেখা ক্ষীণ,
প্রতিটি পাথর হয় কোনো দেবতা না হয় উপদেবতা।
ঈশ্বর ছাড়া আর অন্য কোনো ফসল নেই
সারাবছর ধরে শুধুই ঈশ্বর ফলন
সারাদিন সারারাত শুধুই ঈশ্বর
মাটি উষর অনুর্বর
শক্ত পাথর পাহাড়
শয়নকক্ষের মতোই
দৈতাকার পাথর খন্ডটিই
শাপগ্রস্তা খান্ডোবা পত্নী
আর এই ডানদিকের ফাটলটিই হলো
খান্ডোবার বিশাল তরবারির দাগ।
তিনি একদিন তাকে ভূপাতিত করেন
ভয়ংকর ক্রোধ স্বরূপ
পাথরে আঘাত,এই ফাটল,চ্যুতি রেখা
এবং পবিত্র ঝর্ণাধারার উৎস রেখা।
(খান্ডোবা শিবের আর এক রূপ।অন্য নাম মার্তন্ড,ভৈরব ,মাল্লারী এবং খান্ডুরাও। মূলত: মহারাষ্ট্র এবং কর্নাটকের কিছু অংশে উপাসনা করা হয়।)
No comments:
Post a Comment