নিউরো
(১)
নিঃস্বর
কি ঘুম ভাঙালি রাত্রিচর?
সন্ধ্যাবেলায় তোর মুখ দেখি কি নিঃস্বর!
আড়ালে ভাঙছি নিজের পাথর,
স্তব্ধ, গড়িয়ে ঘামছি।
সাত তাড়াতাড়ি লিখছি মৃত্যু
প্রজাপতি-জর্জর!
সন্ধ্যাবেলায় দেখিনি তো মুখ!
আড়ালে লিখছি, কি মিথ্যুক!
মিশিয়ে দিচ্ছি, যা মিশছে না -
মেলাচ্ছি ভুলচুক!
কি ঠোঁট ভাবালি মেঘবিভব?
বানানে কয়েদী, মেজাজে আহির ভৈরব!
(২)
মানসী
টিনের যুদ্ধ, যোদ্ধা সাজছি প্রভু।
তার আগে বৃষ্টি পড়ছে।
আগে চৌকাঠ, পরে মন্দির
অভ্যন্তরে তিনি। কাঠামো উঠেছে।
পলি, গঙ্গার কতোদূরে।
এখানে আসেনি, বাসে যেতে হয়, কেন যেতে হয়!
যেতে চলন্ত বাসে আগুন - শট সার্কিট -
তেলের পাইপে আগুন লেগে গেছে।
কাঠামো রয়েছে। কাঠামো পুড়ছে...ঢেউ...
অভ্যন্তরে তিনি। কতোদিন তাঁকে যত্ন করেনি কেউ।
(৩)
শ্লোক
বৃষ্টি সোৎসার,
বৃষ্টি, সাক্ষীর ঠোঁট।
ঘুমটা কম হোক।
যমটা নিঃশেষ-শ্লোক।
স্তব্ধ পাঞ্চাল ঘরগৃহস্থের
ভস্মে মন্থরা কার্যনির্বিষ!
শেষটা পুষ্পক
পাহাড়ে আছড়াক!
জড়িয়ে নেমে আয় গোলচুমুক।
কষাটে দু-ফোঁটা, জিভ তো জানবেই,
কেন না পাহাড়ের অম্লরোগ।
তুমি তো জানবেই
বৃষ্টি সোৎসার...
যমটা নিঃশেষ শ্লোক!
(৪)
আঙ্গিক
সারা পৃথিবীর কোণে
একটুকরো সন্তাপ লিখে দিতে পারি।
কিন্তু তোমার কাছে সন্তাপজয়ী?
লোহার কাঠামো কখন যে ধূপস্নান করে!
যে তীরে গঙ্গাজল, সে তীরেই লহরী!
লোহার কাঠামো কখন শান্তিপাঠ করে?
লিখছি সন্তাপ একটুকরো তারই ওপর!
(৫)
সন্দর্ভ
হয়তো তোমারই ধুলো
জুটিয়ে নিয়েছি সেই সম্বল!
লুকনো সর্পাঘাত
আলোটা ভাঙলে মাথা ফাটতো।
আগে কি জানতো ওই বাঁধানো মঞ্চ?
যেন গোকুলে আন্দাজ - মরবে কৃষ্ণ!
কি যেন ইঙ্গিত, কি যেন ইশারা...
সেটা কতোটা ফুটপাথ, কতোটা ভাগ্য?
আজ রাধিকা কাঁদছে, ওই বেহাগ নামছে,
আর আশিতে অভিনেতা স্মৃতিতে ভার্গব।
নাকি, আমি, যে দেখছি, তার চোখটা নষ্ট।
সেটা মঞ্চে ঘটেনি, সেটা স্পষ্ট রাস্তায়।
আজ স্বর মিলিয়ে দেয় নিউরো-জেনারেশন,
সুর মিলিয়ে রাখে হত্যায়।
আলোটা ভাঙলে মাথা কি ফাটতো?
তোমারই ধুলো, জল...চিকচিক!
(৬)
আমি ও আমার কাটা হাত
থামতেই হাত কাটা হাত চলা শুরু করে দিলো।
একটা সূচ, আর চারদিকে ক্যামেরা - ওর।
সমুদ্রে বরফ মরে গেলো।
বরফে যে ঘাস জন্মালো
তাকে কি করে অন্ধ বলি, জাতক!
শরীর থেকে
স্বেদবিন্দুর মতো গড়িয়ে পড়ছি একদিকে -
বরফের আবাদভূমি থেকে।
গোলাপও খুব ধূসর!
বরফ কেটেছি -
বরফ চেয়ো না।
নাকি ছল ভাবছো?
শান্তি অথবা মৃত্যুর খবরেও
কোথাও এক পেগ মদ নেই!
পেঙ্গুঈন জড়ো হওয়া মানুষ নেই।
(৭)
পার্মানেন্ট ডিসুজারা
ও কিন্তু জানে,
গীটার যে বাজায় সে ওরই!
তবু তাকে ঝোলাবে, ধ্যাড়াবে ওই মেয়ে।
এটা ওর ভালো লাগে।
ও তো জানে - ও ছাড়া কিছুই নেই বরাতে।
তাই দু-দিন গোলমাল করে ফোন কেটে দেয়।
জানে, পার্মানেন্ট ডিসুজাটা গোয়ানীজ নয়।
হলে, এক্কা-দোক্কা খেলে, ও কেটে পড়তো।
ডিসুজা কি মেয়ে হয়, মেয়ে হলে মরতো।
আহা, তা বলে কি কবর খুঁড়বে না কেউ?
আমরাও গানে গানে টেবিল বাজিয়েছি।
ও শুধু মাঝরাতে ঘোরে মেয়েদের মতো করে।
ও ছেলেটা, ও মেয়েটা, গীটার বাজাও।
ডিসুজা বাইশ, আর ডিসুজা চব্বিশ।
ও কিন্তু জানে, গীটার যে বাজায় - সে ওরই।
তাও তাকে ঝোলাবে, ধ্যাড়াবে ওই মেয়ে।
No comments:
Post a Comment