১.
কাঙাল
একটু স্নেহ হবে?
এতকাল শুধু কুয়াশায় হেঁটে হেঁটে
কোথাও বিশ্বাস খুঁজে পাইনি
মানুষেরা অরণ্যে গেছে, সভ্যতা এখন অরণ্যনগর
রাস্তার বিজ্ঞাপনে কত পান্থশালার নাম
কত সুশাসকের স্ট্যাচু এখনও বক্তৃতা দিচ্ছে
চারপাশে এখনও কত হাততালি
আমি অন্ধকার মেখে গড়াচ্ছি কুসুমের দিকে
কুসুমের নরমগালের রোদে কত স্নেহ ঝরে
পৃথিবী মাতাল হয়, সভ্যতা স্বপ্ন বিলি করে
দু’দণ্ড বসতাম পাশে
কয়েক কদম হেঁটে গিয়ে
আমার মৃত মায়ের জায়নামাজে ঘুমোতাম
কখনও কোনও পাখি ডেকে দিত ভোর হলে
জল নিয়ে ফিরত কোনও নারী নীরব স্নেহের হ্রদে
আজ যদি বিশ্বাস এসে কাছে দাঁড়ায়
আজ যদি প্রসারিত হাতে বিশ্বাস বলে :
দ্যাখো, কোনও অস্ত্র নেই…..
স্নেহমাখা কুসুম তোমার অপেক্ষায় আছে!
২.
তরঙ্গ বয়ে যাচ্ছে অস্তিত্বের উপর
গৃহস্থ মাছেরা এসে দরজা ধাক্কায়
আমার আদৌ কি কোনও দরজা আছে?
এই সলিলে, সময়ের বিমর্ষ সলিলে ডুবে আছি
তরঙ্গ বয়ে যাচ্ছে অস্তিত্বের উপর
দাঁত, মুখ এবং কামড় একসঙ্গে এগিয়ে আসে
আত্মরক্ষার কিছু নেই
অতি সামান্য ভঙ্গুর কল্পনার বাড়ি
বাক্-বিতণ্ডায় দরজা নির্মাণ —
মাছেরা ঘাই মারে
বৃহৎ পুচ্ছ তাড়নায় কেঁপে ওঠে আশ্রয়
কার তবে বন্দনা করি?
এই জলে কোথায় আছ জলেশ্বর ?
৩.
আমার কোথাও বাড়ি নেই
ছেলে কোলে বসে আছে মেঘ
বাড়ি খুঁজতে খুঁজতে আমি ফিরি
সমস্ত আকাশ জুড়ে মেঘের কলোনি
এগলি ওগলি পথে কত না কাহিনি
শব্দের নাকছাবি পরে বসে আছে
কল্পনার রানি
আমার কোথাও বাড়ি নেই, দৃশ্যত অবলম্বন শুধু
যে ডাকে তার কাছে যাই
নক্ষত্রের গান শুনি
জ্যোৎস্নায় যদি কারও ছোঁয়া পাই
হিল্লোল নিয়ে এসে তবে
ধারণায় নির্মাণ করি নতুন আশ্রয়
কোনও কোনও বৃষ্টির রাতে
দেখি ফিরে আসে মনের জানালায়
অতীত স্মৃতির ধ্বনি
আমি তার কাছে আমার সমস্ত চুমু রাখি
আমি তাকে আবার নতুন জাগরণ পাঠাই