July 31, 2021

শান্তনু দাশ

দায়ক

 

ধর্মাধিকরণ প্রাঙ্গণের কৃষ্ণসিংহাসনে আসীন দণ্ডদায়ক মহিষধ্বজ ধর্মরাজ,

দক্ষিণ হতে ভেসে আসছে নরপিশাচবর্গের বিনীত আর্তনাদ, উত্তর হয়ে সুমধুর রুদ্রবীণার তান। এই স্বর্গ নরকের মধ্যবর্তীতে দণ্ডায়মান, আমি, একাকী সঙ্গী সাথীহীন

“ তুমি দুরাচারী, কপটী, কী লাভ অর্জিত করলে এই অধর্মসম্পাদনে ? ” ধর্মশমন প্রাঙ্গণের সর্বসম্মুখে জিজ্ঞাসা করলেন আমারে ।

সম্পূর্ণরূপে ক্ষান্ত তখনও হননি তিনি । ক্রোধান্বিতরূপে পুনরায় সূর্যপুত্র বলে ওঠে, “ ধিক , ধিক জানাই তোমার মতিকে, কেন হলে না ধর্মের শরণাগত ? ”

                    

   এইকথা শুনে সহাস্যে প্রতিবচন করি, “ আমি ? সবাই যদি হয়ধর্মের বশীভূত , ধর্ম আবির্ভূত হবে কী করে ?

ধর্মের জয় যদি হয়ে থাকে পূর্বলিখিত, 

তবে অধর্মকে আলিঙ্গন করতেই হবে ধর্মকে

ধর্মকে বাঁচতে, ধর্মকে চলতে প্রতিপদে 

সাহায্য করবে অধর্মই , অন্যথা নয় কিছুই; আমি এই করেছি মাত্র, ধর্মরাজ, আমি এই কার্যের কেবলই নিমিত্ত ।

কেবল নহে ভীষ্ম, আমারও ছিল ভীষণ প্রতিজ্ঞা ,

যখন আমার পরিবার ওই ভীষ্মের আদেশক্রমে ছিল কারাগারে বন্দি, অসহায়, অভুক্ত ; 

তখন কোথায় ছিল এই ধর্ম ? এই সদাচার ?

 তারা তৈরী করেছিল আমায় নিজস্ব মৃত্যুর পথ অঙ্কিত করে, 

চুতুরঙ্গের ঘোটক

সেই শতজনের আশীর্বাদ আমার মস্তকপরে, 

হে যম পাপ আমার পুন্য সমতুল্য

ছিল একটিমাত্র অভিলাষ ,

 ভীষ্মের বংশ বিন্যাস ও বিনাশ ।

কে করেনি পাপ , কে করে না অধর্ম এই পটভূমে ?

 কালদেব, ধর্ম তখনই করে জয় যখন তার বর্ম অধর্ম হয়

ধম জয়ী হয়ে কী সে পেল ?

 যোগ্যপ্রাপ্যনিধি তো অধর্মের রয়ে গেল

আমার নামার্থ শুভ, নই শোক-অনুতাপে

শকুনি আমি , 

খলনায়কের বেশে আমিই নায়ক ও ধর্মদায়ক এই একছত্রভারতে। ”





গুচ্ছ কবিতা।।তৈমুর খান ।।

সমস্ত যুদ্ধের পর   অনেক মৃত্যুর পর এই বেঁচে থাকা  হেসে ওঠে মাঝরাতে  কোনও পিয়ানোর সুরে  খোলাচুল উড়ে আসে তার  বুকের ভেতর থেকে জ্যোৎস্নার ফণা ...